নিজস্ব প্রতিবেদক: আর তিনদিন বাদে ঈদ। ঈদের আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বেড়ে গেছে। আর ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। ফলে সাড়ে ৬০০ টাকা গরুর মাংসো কিনতে হচ্ছে ৭০০ টাকার নিচে এখন গরুর মাংসের কেজি পাওয়া যাচ্ছে না।
গরুর মাংস ও ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দাম। সেই সঙ্গে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। তবে সবজি কিনতে ক্রেতাদের চড়া দাম দিতে হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭০০ টাকা। কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৭১০ টাকা কেজিতেও গরুর মাংস বিক্রি করছেন। এক সপ্তাহ আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা।
রায়সাহেব বাজারে ৭০০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রি করা বিক্রয়তা বলেন, কয়েকদিন ধরে গরুর খরচ বেড়ে গেছে। এ কারণে মাংসের দাম বেড়েছে। যদি পরিস্থিতি এমন থাকে সামনে গরুর মাংসের কেজি সাড়ে ৭০০ টাকা হয়ে যেতে পারে।
গরুর মাংসের পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। তবে সোনালি মুরগির কেজি গত সপ্তাহের মতো ৩০০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে রায়সাহেব বাজারের ব্যবসায়ী জাকির বলেন, আর কয়েকদিন পরই ঈদ। ঈদের আগে শেষ শুক্রবার। তাছাড়া বাজারে এখন মুরগির সরবরাহ কম। আমাদের ধারণা এ কারণেই ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। ঈদের পর মুরগির দাম কিছুটা কমতে পারে।
এদিকে সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে হুট করে বেড়ে যাওয়া গাজরের দামে এ সপ্তাহে কোনো পরিবর্তন আসেনি। গত সপ্তাহের মতো গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
গাজরের মতো অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ সবজির দাম। গত সপ্তাহের মতো ব্যবসায়ীরা বেগুনের কেজি বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৭০ টাকা। শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা।
এছাড়া পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সজনের ডাটার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ টাকা কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।
সবজির দামের বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী কাশেম বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি। বরবটি, বেগুন, পটল, শসা সবকিছু গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে। ঈদের পর বেগুন, পটলের দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে অন্যান্য সবজির দাম কমার সম্ভাবনা কম।
ডিমের দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১০৫ টাকা ডিম বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে আর পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতোই ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে টাকি মাছ। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। ১ থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে হাজার টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি।