নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজার টানা চার কার্যদিবস উত্থানের পর সোমবার সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। একই সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দরও কমেছে। আগের দিনের ধারাবাহিকতায় আজও ব্যাংক ও বীমা খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বীমা খাতের ৫৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ১০টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে একটি কোম্পানির শেয়ার। আর ব্যাংক খাতের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩টির, কমেছে দশ টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে দশ কোম্পানির শেয়ার। আর তাতে বড় সূচক পতন থেকে রক্ষা পেলো শেয়ারবাজারে।
এদিকে দরপতনকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মূল্য সংশোধন হিসাবে দেখছেন। তারা মনে করেন, টানা বৃদ্ধি শেয়ারবাজারের জন্য ভালো না আবার টানা কমাও ভালো না। এদিকে শেয়ারবাজারে তারল্য বাড়ানো এবং দরপতন ঠেকানোর লক্ষ্যে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ বা ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল’ থেকে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। সরকারি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যমে গত সপ্তাহে এই বিনিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দিলে গত ৮ মার্চ ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ থেকে ১০০ কোটি টাকা দ্রুত বিনিয়োগের নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওই নির্দেশের প্রেক্ষিতে সিএমএসএফ’র ১০০ কোটি টাকা সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করছে। গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬.৩২ পয়েন্ট বা ০.২৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৬৬.৯১ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৬.৯০ পয়েন্ট বা ০.৪৭ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯.৫৫ পয়েন্ট বা ০.৩৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪৫৪.৬৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৪৭৬.৫৭ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫৯৩ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩০২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৮৯৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকার।
ডিএসইতে ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৩টির বা ২৯.৮৯ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ২২২টির বা ৫৮.৭৩ শতাংশের এবং ৪৩টির বা ১১.৩৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৩৬.৫৯ পয়েন্ট বা ০.১৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৬০৯.৩৯ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৭৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১১১টির, কমেছে ১৩৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দর। সিএসইতে ২০ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- আইপিডিসি, বেক্সিমকো লিঃ, ওরিয়ন ফার্মা, বিএসসি, স্কয়ার ফার্মা, জেনেক্স ইনফোসিস, প্রভাতী ইন্সুরেন্স, ডরিন পাওয়ার, বিডি কম ও লাফার্জহোলসিম।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্সুঃ, অগ্রনী ইন্স্যুরেন্স, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, আইসিবি এএমসিএল ২য় মি. ফা., রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স ও কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স। দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- মনোস্পুল পেপার, জেমিনী সী ফুড, জেএমআই হসপিটাল, পেপার প্রসেসিং, বিআইএফসি, জিবিবি পাওয়ার, হাওয়া অয়েল টেক্স, ভিএফএসটিডিএল, ওয়াইম্যাক্স ইলেক্ট্রোড ও বীকন ফার্মা।