সাভার প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় একটি পোশাক কারখানায় কয়েক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানাটির সামনে বসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর থেকে এখন পর্যন্ত আশুলিয়ার গাজিরচটে অবস্থিত ঢাকা টেক্স নামের একটি পোশাক কারখানার সামনে এ আন্দোলন করছেন তারা।
শ্রমিকরা জানান, ঢাকা টেক্স কারখানাটিতে গত জানুয়ারি মাস থেকে শ্রমিকদের বিভিন্ন মাসের বেতন না দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়। পরে বিষয়টি কারখানা কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা কয়েকজন শ্রমিককে বেতন দেয় আবার কয়েকজনকে বেতন দেয় না। গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন বেশিরভাগ শ্রমিক পায়নি। অনেক শ্রমিককে বিকাশে বেতন দেওয়ার কথা বলে ঘুরিয়েছে। যার বেতন ২০ হাজার টাকা তাকে বিকাশে ২ হাজার টাকা দিয়েছে। এমন করে কয়েকজনকে টাকা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে জানানো হলে পুলিশও কোনো ব্যবস্থা নেইনি। তাই আজ কারখানার সামনে অবস্থান করছেন শ্রমিকরা।
কারখানাটির রুবিনা নামের এক শ্রমিক বলেন, আমরা কাজ করেছি তিন মাসের বেতন পাবো। মালিক আমাদের টাকা দেয়নি। বেতন চাইতে গেলে কারখানার মালিক বেতন না দিয়ে হুমকি দেয়। প্রয়োজনে সে পুলিশকে টাকা দেবে কিন্তু শ্রমিকদের টাকা দেবে না। জানুয়ারি মাস থেকেই অনেক শ্রমিকের বেতন নিয়ে ঝামেলা করছে।
আমানুল্লাহ আমান নামের আরেক শ্রমিক বলেন, বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা তিন মাস ধরে ধৈর্য সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। গত ১৩ এপ্রিল থেকে মালিকপক্ষ গা ঢাকা দিয়েছে। তাদেরকে আর পাওয়া যায়নি। এই ঈদের মৌসুমে রমজান মাসে অন্যের বাড়িতে ভাড়া থেকে কাজ করছি। বাসা ভাড়া দিতে পারছি না। দোকানের বাকি রয়ে গেছে টাকা দিতে পারছি না। বেতন না পেলে সামনের ঈদ কীভাবে আমরা উদযাপন করবো সেটাই বুঝতে পারছি না। এর জন্য আমাদের দাবি মালিকপক্ষ যেন বেতনটা দিয়ে দেয়।
কারখানাটির চেয়ারম্যান মনসুর আহমেদ বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে অনেক কথা বলছি আর বলতে পারবো না। আপনি আমাদের এমডির সঙ্গে কথা বলেন। আমরা শ্রমিকদের দাবি অযৌক্তিক।
কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ আলম বলেন, যারা আন্দোলন করছেন তারা সন্ত্রাসী। যারা মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে চাঁদা দাবি করেন। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্কে নেই। আমাদের যারা শ্রমিক আছেন তাদের বেকেয়া আমরা পরিশোধ করে দিয়েছি৷
বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক নেতা সারোয়ার হোসেন বলেন, এই কাখানার মালিক হচ্ছে ফলস। শ্রমিকরা লিখিতভাবে শিল্প পুলিশকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মালিক এদেরকে টাকা দেবে দেবে বলে আর দেয় না। এই কারখানার মালিকপক্ষ এই শিল্প অঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ করার জন্য পাঁয়তারা করছে। আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।