নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে ফিলিপাইনকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেন এল ডেনেইগা’র সঙ্গে সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) ঢাকা চেম্বার থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেন এল ডেনেইগা ১১ মে ডিসিসিআই সভাপতির সঙ্গে ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, করোনা মহামারির পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক হওয়ার পর বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আমাদের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের দৃঢ়তা এবং সরকারের সামষ্টিক অর্থনীতির দক্ষ ব্যবস্থাপনার ফলে সম্ভব হয়েছে।
পর্যটন ও স্বাস্থ্য খাতে ফিলিপাইন অনুকরণীয় সাফল্য দেখিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশের এ দুটি খাতের উন্নয়নে ফিলিপাইনের সহায়তা ও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বিশেষকরে দক্ষ নার্স তৈরিতে এদেশে ‘নার্সিং ইন্সটিটিউট’ স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১২৪.৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৪৯.৭২ এবং ৭৪.৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর, ঢাকা-ম্যানিলা সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু, দুদেশের শুল্ক কাঠামোর যুগোপযোগীকরণের উপর জোরারোপ করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।
এছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তি ও ফিনটেক, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, চামাড়া ও পাদুকা, প্লাস্টিক পণ্য এবং ওষুধ প্রভৃতি খাতে ফিলিপাইনের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান রিজওয়ান রাহমান।
ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেন এল ডেনেইগা বলেন, এলডিসি হতে বাংলাদেশের উত্তোরণ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের সম্প্রসারণে ফিলিপাইনসহ আশিয়ান অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতের উন্নয়নে বাংলাদেশ এরইমধ্যে ‘রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, যার সুফল দেশের জনগণসহ অর্থনীতিতে প্রতিফলিত হবে।
বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ এ খাতে যোগাযোগসহ অন্যান্য সেবা প্রদানে আন্তর্জাতিক মান অর্জন এবং মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বাংলাদেশের হসপিটালিটি এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে ফিলিপাইনের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান এবং ঢাকা-ম্যানিলা সরাসরি বিমান যোগাযোগ দুদেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও পর্যটন খাতের সম্প্রসারণে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ-ফিলিপাইন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি আকবর হাকিম বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনা সম্পর্কে ফিলিপাইনের উদ্যোক্তাদের সম্যক ধারণা প্রদানের লক্ষ্যে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দূতাবাসের প্রতি আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ও ফিলিপাইন দূতাবাসের থার্ড সেক্রেটারি এবং ভাইস কনস্যুল ক্রিস্টিনা হোপ ভি রাইস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।