বাংলাদেশে ‘পিকক্ স’ ব্র্যান্ডের ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাজ্যভিত্তিক ক্রেতা ‘পিকক্ স’ ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করে কোনো বিদেশি ক্রেতা বা এডিনবার্গ উলেন মিলস লিমিটেডের এজেন্ট বা বায়িং হাউজ বাংলাদেশের কোনো পোশাক কারখানার সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না। তাদের সব ধরনের রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করে সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত।

মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম নীলিম জানান, যুক্তরাজ্যভিত্তিক ক্রেতা ‘পিকক্ স’ কর্তৃক প্রতারিত হয়ে ৪টি পোশাক কারখানা- ডিজাইনটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেড, ডিজাইনটেক্স ফ্যাশনস লিমিটেড, নিটবাজার (প্রা.) লিমিটেড এবং বটমস গ্যালারি (প্রা.) লিমিটেড জাহাজীকৃত পণ্যের জন্য টাকা পরিশোধের দাবি জানিয়ে ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক দেওয়ানি মামলা করে।

মামলার বিবাদীরা হচ্ছে- দি এডিনবার্গ উলেন মিলস লি. (ইডব্লিউএম) এর ঢাকা লিয়াঁজো অফিস, পিকক্ স স্টোরস লিমিটেড, ইউকে এবং এডিনবার্গ উলেন মিলস গ্রুপসহ আরও ৮ জন। মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকেও প্রো-ফরমা বিবাদী করা হয়।

জাতীয় স্বার্থে উল্লিখিত মামলাটি সিপিসি’র অর্ডার ১, রুল ৮ অনুসারে একটি প্রতিনিধিত্বমূলক দেওয়ানি মামলা হিসেবে দায়ের করা হয়। কারণ, এর আগে আরও অনেক পোশাক রপ্তানিকারক ‘ইডব্লিউএম’ গ্রুপ, ‘পিকক্ স’ এবং সহযোগীদের ইচ্ছাকৃত এবং যৌথ প্রতারণামূলক কার্যকলাপের শিকার হয়েছেন।

মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, ১ থেকে ৭ নম্বর বিবাদী অর্থাৎ ইডব্লিউএম গ্রুপ এবং তার মালিকরা তাদের নিজস্ব কোম্পানির একটিকে অর্থাৎ পিকক্ স’কে (বিবাদী নং৩) দেউলিয়া ঘোষণা করে তাদের নিজস্ব পছন্দের প্রশাসক নিয়োগ করেছে। তারা নিজেদের সিইও, স্টিভ সিমসন (বিবাদী নং ৭) এবং নিজস্ব কোম্পানির (বিবাদী নং ৪ ও ৫) মাধ্যমে দেউলিয়া প্রক্রিয়া থেকে বের করে পুনরায় কোনোরকম দায় বা ঋণ ঘাড়ে না নিয়ে নতুন কোম্পানির মতো ব্যবসা শুরু করেছে, যা প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়। এখন তারা পিকক্ স’কে নতুন কোম্পানির মালিকানাধীন দাবি করে বিষয়টি সম্পর্কে অজ্ঞ অনেক কারখানার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের পোশাকখাতের ক্ষতি করছে।

এমতাবস্থায় বাদীপক্ষ গত ১৯ মে বিচারিক আদালতে ১ থেকে ৭ নম্বর বিবাদী অর্থাৎ ইডব্লিউএম গ্রুপ যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করছে, তাদের ‘পিকক্ স’ ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার করে কোনো বিদেশি ক্রেতা অথবা তাদের এজেন্ট/বায়িং হাউজ যেন বাংলাদেশের পোশাক কারখানার সঙ্গে ব্যবসা করতে না পারে অথবা ক্রয়াদেশ দিতে না পারে এবং সব ধরনের রপ্তানি বন্ধ করে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের জন্য আবেদন জানালে আদালত উপরোক্ত মর্মে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।

বাদীরা ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতের উপরোক্ত আদেশ অনুসরণ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিজিএমইএ’কে পত্র দিয়ে অনুরোধ করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডলার বাঁচাতে হংকং-সিঙ্গাপুরের পেমেন্ট সিস্টেমে নজর সরকারের
পরবর্তী নিবন্ধজবাবদিহি ছাড়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই: পিটার হাস