মাসুদ মিয়া ; দেশের শেয়ারবাজার টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে পড়েছে। সোমবার ব্যাপক পতন হলেও মঙ্গলবার পতনের পরিমাণ কিছুটা কম ছিল। গতকাল বুধবার আবারও ব্যাপক পতন হয়েছে শেয়ারবাজারে। এই নিয়ে টানা ছয় কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি লেনদেনেরও খরা দেখা দিয়েছে। গতকাল অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে পাশাপাশি লেনদেন কমেছে সূচকও কমেছে। এ বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন,টালমাটাল বিশ্ব পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে টানা পতনে পড়েছে শেয়ারবাজার ।
গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ১০ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে। এদিকেপুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ব্যাংকগুলোর বিশেষায়িত কোম্পানি মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান জানিয়েছেন, তারা জানতে পেরেছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার দর হারানোর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন একটি গুজব ছড়ানো হয়েছে। বলা হচ্ছে, ডলারে বিনিয়োগ এখন বেশি লাভজনক। ইউক্রেনে রুশ হামলার পর ধস নামা পুঁজিবাজার ঈদের আগে ঘুরে দাাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়ার পর ছুটি শেষেও পরিস্থিতি ছিল ইতিবাচকই। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির ঋণ সমন্বয়ের কারণে শেয়ার বিক্রি করতে বাধ্য হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতির বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও দেশীয় নানা ঘটনায় বাজারে দেখা দেয় আতঙ্ক। টানা দরপতনের মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও আইসিবির বৈঠকের পর একটি বিজ্ঞপ্তি আসে যে, ব্যাংক ঋণ পরিশোধের সময় পিছিয়ে দিতে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতা তহবিল থেকে আইসিবিকে আরও টাকা দেয়া হবে। কিন্তু এসব খবরেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসছে না। গতকাল পতনের ফলে শেয়ারবাজার ১০ মাস আগের অবস্থানে নেমেছে।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯৩.৫৮ পয়েন্ট বা ১.৪৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০৯.৯১ পয়েন্টে। ডিএসইর এই সূচকটি কমে ১০ মাস ৩ দিন বা ২০২ কার্যদিবস আগের অবস্থানে নেমেছে। এর আগে ২০২১ সালের ১৪ জুলাই সূচকটি গতকাল এর চেয়ে কম অর্থাৎ ৬ হাজার ৩০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছিল।
ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১৭.২৬ পয়েন্ট বা ১.২২ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৭.১৮ পয়েন্ট বা ১.১৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৯১.৫০ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩৩৬.৪৮ পয়েন্টে।
ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৭৬২ কোটি ৯৩ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৭৭৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকার।
ডিএসইতে ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির বা ১১.০২ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ৩১০টির বা ৮১.৩৬ শতাংশের এবং ২৯টির বা ৭.৬১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১৭০.০১ পয়েন্ট বা ০.৯০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৭৫.১৫ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫৩টির, কমেছে ২১৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির দর। সিএসইতে ২২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।