নিজস্ব প্রতনিধিি : দেশের শেয়ারবাজারে প্রতি বিনিয়োগকারী আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। শেয়ারবাজারে সব সূচক বেড়েছে। সূচকের সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরও বেড়েছে। এই নিয়ে টানা ছয় কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।
এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, শেয়ারবাজার কমার সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নির্ধারণের পর থেকে সূচক ঊর্ধ্বমুখী অব্যাহত রয়েছে।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম শেয়ারবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ হয়েছে। এমন খররের পর থেকে শেয়ারবাজার চাঙ্গাভাব অব্যাহত রয়েছে। শেয়ারবাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আস্থাহীনতা ছিল সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের ৪০ মিনিটের মাথায় ডিএসই’র প্রধান সূচক ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে এরপরই বদলাতে থাকে চিত্র। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় স্থান করে নেয়। ফলে লেনদেনের প্রথম ৪০ মিনিটে যেখানে মাত্র ৩৬টি প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় ছিল, সেখানে দিনের লেনদেন শেষে প্রায় দেড়শ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। তবে এরপরও প্রধান মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ১৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৯ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির। আর ৫৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৭৫ কোটি ১০ লাখ টাকার। আগের দিন লেনদেন হয় ৭৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৩১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৫০ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ৩৪ কোটি ১৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:-বেক্সিমকো লিঃ,আইপিডিসি, জেএমআই হসপিটাল, ওরিয়ন ফার্মা, শেফার্ড ইন্ডা:, বিএসসি, বিডি কম, রিং শাইন টেক্সটাইল, ফু-ওয়াং ফুড ও জিএসপি ফাইন্যান্স।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- আরামিট সিমেন্ট, পেনিনসুলা চিটাগাং, বিডি কম, রিং শাইন টেক্সটাইল, এএফসি এগ্রো, প্রাইম লাইফ ইন্সুঃ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, অগ্নি সিস্টেম, শেফার্ড ইন্ডা: ও প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুঃ।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, সমরিতা হাসপাতাল, ফার্মাএইড, এবি ব্যাংক, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, সিভিও পিআরএল, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, ওয়ান ব্যাংক ও এটলাস বাংলা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৯৫ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০২টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।