নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। একইসঙ্গে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইর লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। যা ডিএসইতে এক মাসের বেশি সময় পর হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। এর আগের নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের দিন ও পরের তিন কার্যদিবসসহ টানা চার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক কমে ১২৩ পয়েন্ট।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে বাজার মূলধনের পরিমাণ। এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। শুরুতে দেখা দেওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। তবে মাঝে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমলেও লেনদেনের শেষদিকে এসে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান পতনের তালিকা থেকে বেরিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। এতে সূচকের বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ৪৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫১ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৪২৫ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৩২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৪০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বাজারটিতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৯৪৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১০২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১৬ মে’র পর ডিএসইতে আবারও হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হলো। আর ১১ মে’র পর বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটলো।
লেনদেন বাড়ার দিনে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৯ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা শাইনপুকুর সিরামিকের ৫২ কোটি ৩১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩৬ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আরএকে সিরামিকস।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, শাইনপুকুর সিরামিকস, আরএকে সিরামিকস, আইপিডিসি, মুন্নু ফেব্রিকস, জেএমআই হাসপাতাল, সাইফ পাওয়ার, ইউনিক হোটেল, ওরিয়ন ফার্মা ও এইচ আর টেক্সটাইল।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু ফেব্রিকস, সাইফ পাওয়ার, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ডোমিনেজ স্টিল, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মা, একমী পেসটিসাউড, ইফাদ অটোস ও খান ব্রাদার্ম পিপি। দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, নাহী অ্যালুমিনিয়াম, শাইনপুকুর সিরামিক, জেমীনি সী ফুড, ফু-ওয়াং সিরামিক, বিজিআইসি, কাট্টালী টেক্সটাইল, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ও ব্র্যাক ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১২৫.৩২ পয়েন্ট বা ০.৬৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮৯৮.২৪ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৯৫ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৬৫ টির, কমেছে ১০০ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০ টির দর। সিএসইতে ৮৭কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।