নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের (এসএমই) উদ্যোক্তারা চাহিদার মাত্র ৩৩ ভাগ ঋণ পান। আর বিতরণ করা ঋণের মাত্র ১৯ ভাগ পান গ্রামীণ উদ্যোক্তারা। অথচ কোভিড-১৯ মহামারিকালে এসএমই খাতের উদ্যোক্তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সোমবার (৬ জুন) নগরীর পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং ইকোনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন (ইউএনইএসসিএপি) এর উদ্যোগে আয়োজিত ‘রেথিনকিং এমএসএমই ফিন্যান্স: অ্যা পোস্ট-ক্রাইসিস পলিসি এজেন্ডা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি (ডিজিটাল ফাইনান্সিং এবং ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলজি) ও ক্লাস্টারভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রসারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণের আওতায় আনার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত ও সুপারিশ গ্রহণের লক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা ও বিশেষ অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. জাকের হোসেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ এর কারণে দেশের ৯৪ ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমে গেছে। ২১ ভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠানের ৩৭ ভাগ কর্মী কাজ হারিয়েছেন এবং ৭০ ভাগ কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে ছিলেন।
তিনি বলেন, একই সময়ে শতকরা ৮৩ ভাগ প্রতিষ্ঠান লোকসানের মুখে পড়েছে এবং ৩৩ ভাগ প্রতিষ্ঠান ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারেনি। এজন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের পরিমাণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। অথবা প্রণোদনা প্যাকেজ নতুন করে দেওয়া না হলেও সহজ শর্তে তাদের জন্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করা দরকার।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, দেশের শিল্পখাতের কর্মসংস্থানের ৮৫ ভাগই এসএমই খাতের অবদান। দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান বাড়াতে এ খাতের উন্নয়নে কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন। তিনি এসএমই খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন বলেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এসএমই উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রয়োজন। এজন্য উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়া সহজ করতে ডিজিটাল সেবা চালু করা যেতে পারে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বিআইবিএম-এর সহযোগী অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেন জানান, দেশের প্রায় ৮১ লাখ এসএমই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮ লাখ বা ৭০ ভাগ শহর এলাকার বাইরে হলেও এসএমই ঋণের ৮১ ভাগই পান শহর এলাকার উদ্যোক্তারা। আর নারী উদ্যোক্তারা পান মোট ঋণের মাত্র ৭ ভাগের মতো।