আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়াই ১০ লাখ টন গম রপ্তানি করতে ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জানা গেছে, ভারত রপ্তানি নিষিদ্ধ করার আগেই এসব গমের জন্য ঋণপত্র (এলসি) খুলেছিলেন বাংলাদেশি আমদানিকারকরা। সম্প্রতি ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানায় নয়াদিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন।
শনিবার (১১ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাঠানো চিঠির একটি অনুলিপি হাতে পেয়েছে তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রতি বছর ৬৭ লাখ টন গম আমদানি করে। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ১২ থেকে ১৩ লাখ টন গম সংগ্রহ করে বাংলাদেশ সরকার। আর ৫০ লাখ টনের বেশি গম বেসরকারিভাবে আমদানি করা হয় ভারত থেকে।
গত ২৫ মে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর গত ১৩ মের আগে ইস্যু হওয়া এলসিগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে বাংলাদেশ, যেখানে ওই ১০ লাখ টন গম আমদানির কথা উল্লেখ রয়েছে।
গত ১৩ মে অনেকটা হঠাৎ করেই গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি)। তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হওয়া ওই নিষেধাজ্ঞায় বৈশ্বিক গম সরবরাহ ব্যবস্থার সংকট আরও তীব্র হয়।
তবে বিজ্ঞপ্তিতে ডিজিএফটি জানায়, ১৩ মে’র আগে গমের জন্য যেসব ঋণপপত্র (এলসি) ইস্যু করা হয়েছে, সেগুলোর চালান পাঠানো যাবে। তাছাড়া প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ভারতের গম রপ্তানি বন্ধ হবে না।
পরে ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনও নিশ্চিত করে, বাংলাদেশে ভারতের গম রপ্তানিতে কোনো বাধা নেই। পাশাপাশি, অন্য যেসব দেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে ভারতীয় গম আমদানি করতে ইচ্ছুক, সেসব দেশের সরকারের অনুরোধ সাপেক্ষেও গম রপ্তানি চলবে।
তবে এরপরও নানা জটিলতায় ভারতে বাংলাদেশমুখী গমের বহু চালান আটকে রয়েছে। গত ২ জুন কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, গম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছে না শত শত ভারতীয় ট্রাক। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থলবন্দরে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে আনুমানিক চার লাখ টন গম নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেগুলো। ভারতের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গমবোঝাই ট্রাকগুলোকে বাংলাদেশে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
এরপর ৯ জুন টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতে গম রপ্তানিতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের কারণে বাংলাদেশে আসতে পারছে না মালবাহী ১২টি ট্রেন। এসব ট্রেনের মোট ৫০৪টি ওয়াগনে প্রায় ২ হাজার ৪০০ টন গম রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যেসব রপ্তানিকারক এসব গমের চালান বাংলাদেশে পাঠাতে চান, তারা ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের (ডিজিএফটি) অধীন আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষগুলোর কাছ থেকে নিবন্ধন সনদ (আরসি) পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।