নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। এতে ঘটছে টানা দরপতন। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২১ জুন) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শতাধিক প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। এতে বড় পতন হয়েছে মূল্যসূচকের। এর মাধ্যমে সপ্তাহের তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন ঘটলো।
ডিএসইর পাশাপাশি দেশের অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। ফলে দরপতন হয় লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এতে মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে সিএসইতে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে লেনদেনের সময় পাঁচ মিনিট না গড়াতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটির দরপতন হতে থাকে।
এতে লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা না গড়াতেই অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের ক্রয় আদেশের ঘর শূন্য হয়ে পড়ে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে তালিকা। দিনের লেনদেন শেষে ক্রেতাশূন্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৪টি।
বিপুল সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট দেখা দেওয়ায় দিনের লেনদেন শেষে মাত্র ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ২৮২টি। আর বাকি ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩১১ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ২৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭২৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লেনদেন কমেছে ৯৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আনোয়ার গ্যালভানাজিংয়ের ২৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফু-ওয়াং ফুড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, শাহিনপুকুর সিরামিক, আরএকে সিরামিক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এইচআর টেক্সটাইল, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৩৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ২৭ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৭৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১১টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।