নিজস্ব প্রতিবেদক : কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার বলেছেন, ‘ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট সবাই পাবেন না। কারণ টিকিটের চেয়ে টিকিটপ্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক বেশি। তবে টিকিট কালোবাজারির কোনো সম্ভাবনাও নেই।’
শুক্রবার (১ জুলাই) সকালে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরুর দিনে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ সারোয়ার বলেন, ‘ঈদযাত্রায় প্রতিদিন ট্রেনের ২৬ হাজার ৭২৯টি অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে অনলাইনে অর্ধেক এবং কাউন্টারে অর্ধেক টিকিট দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার সাতটি স্টেশনের কাউন্টারে ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। কমলাপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, ফুলবাড়িয়া, গাজীপুরের জয়দেবপুর এবং কমলাপুরের আরেকটি জায়গা নারায়ণগঞ্জ শহরতলী থেকে ৩৭টি আন্তঃনগর ট্রেনের ঈদের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। অনলাইনে অর্ধেক টিকেট এবং অর্ধেক টিকেট কাউন্টার থেকে বিক্রি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকেই স্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড় শুরু হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই এমন ভিড় দেখা গেছে। আগেই ধারণা করেছিলাম, যাত্রীদের চাপ বাড়বে। আগামীকাল (শনিবার) আরও ভিড় হতে পারে। টিকিটপ্রত্যাশীদের সংখ্যা অনেক বেশি। সবাই টিকিট পাবে না।’
অনলাইনে টিকিট না পাওয়ার বিষয়ে স্টেশন ম্যানেজার বলেন, ‘সহজ থেকে আমরা যে ব্যাখ্যাটা পেয়েছি, তা হলো- সকালে ১৩ হাজার টিকিটের জন্য সাড়ে চার লাখ টিকিটপ্রত্যাশী সার্ভারে ঢুকেছে। ১৩ হাজার মানুষই কিন্তু টিকিট পাবেন। বাকিরা টিকিট পাবেন না। অধিকাংশ লোকই যেহেতু টিকিট পাবে না, তাই অভিযোগটা থাকবেই। অনলাইনে আমি নিজেও সকালে চেষ্টা করেছি, টিকিট কিনতে পারিনি। একসঙ্গে এত মানুষ টিকিট নিতে চাইলে তো আর পাওয়া সম্ভব না।’
তিনি বলেন, ‘টিকিট সংখ্যা যেহেতু নির্দিষ্ট। টিকিট বিক্রি হয়ে গেলেও ১০ হাজার মানুষ অপেক্ষায় থাকলেও সেখানে কেউ আর টিকিট পাবেন না। যারা টিকিট পাবেন না, তাদের অভিযোগগুলো থেকেই যাবে।’
টিকিট কালোবাজারি বিষয়ে মাসুদ সারোয়ার বলেন, ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার। এ নীতিতে আমরা গতবার ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেছি। এতে করে টিকিট কালোবাজারির কোনো খবর পাইনি গতবার। এবারও কালোবাজারি ঠেকানো হবে। কাউন্টারে টিকিট কালোবাজারির কোনো সুযোগ নেই। রেলপথ মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য এজেন্সি কাউন্টারের ভেতরে তদারকি করছে। আমাদের ১০ জন অফিসার রয়েছে কাউন্টারের ভেতরে।’
সহজে টিকিট কালোবাজারি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রেলপথ মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্তগুলো নেয়, আমরা সেগুলোর বাস্তবায়ন করি। গতবার যে অভিযোগ উঠেছে, সেটার ব্যাখ্যা দিয়েছে সহজ ডটকম।’
এদিকে, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। টিকিট পেতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাউন্টারে দাঁড়িয়েছেন টিকিটপ্রত্যাশীরা।
জানা গেছে, আজ (১ জুলাই) দেওয়া হচ্ছে ৫ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট, ২ জুলাই দেওয়া হবে ৬ জুলাইয়ের টিকিট, ৩ জুলাই দেওয়া হবে ৭ জুলাইয়ের টিকিট, ৪ জুলাই দেওয়া হবে ৮ জুলাইয়ের টিকিট এবং ৫ জুলাই দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট।
এছাড়া ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। ওইদিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। ৮ জুলাই দেওয়া হবে ১২ জুলাইয়ের টিকিট, ৯ জুলাই দেওয়া হবে ১৩ জুলাইয়ের টিকিট, ১১ জুলাই ১৪ এবং ১৫ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে। তবে ১১ জুলাই সীমিত কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। তবে ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলাচল করবে।