১৪৫ দেশে প্রাণ, ২০৩০ নাগাদ ২ বিলিয়ন ডলার পণ্য রপ্তানির প্রত্যাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল ২০২৫ সাল নাগাদ এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ২০৩০ সাল নাগাদ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি করতে চায়। এ লক্ষ্যে দেশের বাজারে ভোক্তাদের জন্য যেসব পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয় তার সবটুকুই বিদেশে রপ্তানি করতে চায় গ্রুপটি। গত ২৫ বছরে ৫৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি খাতে পণ্য রপ্তানি করা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

রোববার (২৪ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এ লক্ষ্যের কথা জানান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী। গ্রুপটির পণ্য রপ্তানির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আহসান খান চৌধুরী বলেন, ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে প্রক্রিয়াজাত আনারস রপ্তানির মাধ্যমে বিদেশের বাজারে প্রবেশ করে প্রাণ-আরএফএল। বর্তমানে ১৪৫টির বেশি দেশে প্রাণ-আরএফএলর পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। ২৫ বছরে প্রতিষ্ঠানটির আয় ৫৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় ১০টি রপ্তানি খাতের মধ্যে সাতটি খাতে প্রাণ-আরএফএল পণ্য রপ্তানি করে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রায় দেড় বিলিয়ন মানুষ প্রাণের পণ্য গ্রহণ করছেন।

তিনি বলেন, প্রচুর পণ্য প্রাণ-আরএফএল রপ্তানি করে। প্রায় এক হাজারের বেশি পণ্য রপ্তানি করছি। বিদেশে প্রাণের পণ্যের গুণগত মান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মান নিয়ে নানা জায়গায় বিভিন্ন ইস্যু দাঁড়িয়ে যায়। প্রতিদিন কিন্তু গুণগত মানের পরিবর্তন হয়। যেমন- কদিন আগে আরব দেশগুলো বললো যে, কোনো সিনথেটিক কালার ব্যবহার করা যাবে না। আমরা শিখলাম, আমরা জানলাম। নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনলাম। নিজেদের আরও ডেভেলপ করলাম, পণ্য পাঠালাম। কোনো দেশে পণ্য রপ্তানি করার ক্ষেত্রে আগে সে দেশের স্ট্যান্ডার্ড সম্পর্কে জেনে নিই। প্রতিটি দেশের স্ট্যান্ডার্ডকে কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যাই।

আহসান খান চৌধুরী আরও বলেন, আমাদের গ্রুপের পণ্য এখন বিভিন্ন দেশের নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বিখ্যাত সব চেইনশপে স্থান করে নিচ্ছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ওয়ালমার্ট, ক্যারিফোর, লবলোজ, আলদি, লিডল, মাইডিন, ডলারামা ও টেসকোর মতো চেইনশপে পাওয়া যায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পণ্য।

রপ্তানির পরিমাণ বাড়াতে পণ্য বৈচিত্র্যকরণ প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখনই সময় দেশের রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য আনার। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ খাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চাই আমরা।

করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈশ্বিক নানা সংকটের মধ্যেও দেশের রপ্তানি খাত ভালো করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের আরও ভালো করার সুযোগ ছিল। কিন্তু পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট রুটে লাইনার পরিষেবার সুযোগ না থাকা, ফ্রেইটের খরচ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি, পর্যাপ্ত কনটেইনার না থাকাসহ নানাবিধ কারণে আমরা সে সুযোগ পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এসব সমস্যা সমাধান করতে পারলে আগামীতে পণ্য রপ্তানি আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান তৌহিদুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাকিস্তান দূতাবাসের অসৎ উদ্দেশ্য নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধখোলাবাজারে ডলার সংকট, ছাড়ালো ১০৩ টাকা