আট কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক নিম্নমুখী

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোন ভাবেই শেয়ারবাজারে দর পতন থামছে না। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবারও সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহার পর আট কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে আট কার্যদিবসই দর পতন হয়েছে। গতকাল শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। কমেছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, শেয়ারবাজারে প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। সে কারনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কে পড়েছে। এই আতঙ্কের কারনে শেয়ার বিক্রির মহোৎসবে মেতেছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে শেয়ারবাজারে দর পতনের সঙ্গে লেনদেনের খরা হচ্ছে। ঈদের ছুটির পর থেকেই পতনের মধ্যে ছিল দেশের শেয়ারবাজার। এর মধ্যে আবার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। ফলে দরপতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এতে করে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা।
এবিষয়ে বিনিয়োগকারী হাফিজুর রহমান বলেন, অনেক কষ্টে অর্জিত অর্থ একটু একটু করে জমিয়ে কিছুটা লাভের আশায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করি। ২০১০ এর মহা পতনের সময় নিজের মূলধনের বেশিরভাগ অর্থই হারিয়েছেন। তবে হাল ছাড়েননি। ধৈর্য্য ধরে বসেছিলেন। কবে হারানো অর্থ ফেরত পান। পেয়েছিলেনও। তবে ঈদুল আজহা পরবর্তী পতনে তার সেই বিনিয়োগকৃত অর্থের বেশিরভাগ হারিয়ে এবার তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

হাফিজুর রহমানের মতো হাজারো বিনিয়োগকারী তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ হারিয়ে আজ দিশেহার হয়ে পড়েছেন। চোখের সামনে নিজেদের কষ্টে অর্জিত বিনিয়োগকৃত অর্থ হারাতে দেখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার নেই তাদের। কারণ গতকালও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারে বিক্রিতা থাকলেও কেনার মতো কোনো বিনিয়োগকারীই ছিল না। অর্থাৎ শেয়ার বিক্রিতে আগ্রহ থাকলেও ক্রেতা পাচ্ছিল না তারা। এতে করে ওই সব কোম্পানির শেয়ারের দরও কমে যায়। এতে করে লোকসানের মুখে পরেন তারা।
গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২.২৭ পয়েন্ট বা ০.২০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১২৬.৫১ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১.১৬ পয়েন্ট বা ০.০৮ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫.২৪ পয়েন্ট বা ০.২৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৪৫.০৮ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২০০.৮৩ পয়েন্টে।
ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৬৬৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার।
ডিএসইতে ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৫টির বা ৩০.১৮ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ২১৯টির বা ৫৭.৪৮ শতাংশের এবং ৪৭টির বা ১২.৩৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- সোনালি পেপার, রবি এক্সিয়াটা, বেক্সিমকো লিঃ, কেডিএস এক্সেসোরিজ, তিতাস গ্যাস, আইপিডিসি, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স প্রাইম টেক্স, ওরিয়ন ইনফোসিস ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ।

দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- এস আলম কোল্ড রোল্ড, নিউ লাইন ক্লোথিং, প্রাইম টেক্স, ইয়াকিন পলিমার, এইচআর টেক্স, কেডিএস এক্সেসোরিজ, কে অ্যান্ড কিউ, সাফকো স্পিনিং, ক্রিস্টাল ইন্সুঃ ও আলিফ ইন্ডাঃ।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- এশিয়া প্যাসিফিক ইন্স্যুরেন্স ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স দেশ গার্মেন্টস, ইস্টার্ন কেবলস, পেপার প্রসেসিং, শ্যামপুর সুগার, হাইডেল বার্গ সিমেন্ট, সিভিওপিআরএল ও জেনেক্স ইনফোসিস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ৪৩.৫৪ পয়েন্ট বা ০.২৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৯৮৬.৮৭ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৭৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৭৮টির, কমেছে ১৬৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির দর। সিএসইতে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ থেকে সয়াবিন তেলের লিটার ১৮৫ টাকা
পরবর্তী নিবন্ধটাকার মান কমেছে আরও ৫০ পয়সা