‘ইসোয়াতিনিতে ব্যবসার মাধ্যমে আফ্রিকার বিশাল বাজার ধরা সম্ভব’

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘বাংলাদেশকে নিজেদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম অংশীদার হিসেবে দেখতে আগ্রহী ইসোয়াতিনি (সাবেক সোয়াজিল্যান্ড)। দেশেটিতে ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে আফ্রিকার ১৩০ কোটি মার্কিন ডলারের বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারে বাংলাদেশ। তাই ইসোয়াতিনির সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক দৃঢ় করা প্রয়োজন।’

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ঢাকায় সফররত ইসোয়াতিনি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) মতবিনিময় সভায় দেশটির বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সিনেটর মানকোবা খুমালু এসব মন্তব্য করেন।

মানকোবা খুমালু বলেন, ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আফ্রিকা মহাদেশের গেটওয়ে হিসেবে কাজ করতে পারে ইসোয়াতিনি। তার দেশ সাউদার্ন আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট কমিউনিটি (এসএডিসি) ও সাউদার্ন আফ্রিকান কাস্টমস ইউনিয়নের (এসএসিইউ) সদস্য। তাই আয়তন-জনসংখ্যার দিক দিয়ে ছোট হলেও, ইসোয়াতিনিতে ব্যবসা স্থাপন করার মাধ্যমে আফ্রিকার বিভিন্ন অর্থনৈতিক ব্লকের বাজার ধরা সম্ভব।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর, শুল্কছাড়সহ নানান সুযোগ-সুবিধার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসোয়াতিনি অনেক পণ্য আমদানি করে, যেগুলোর বেশিরভাগই আসে চীন ও ভারত থেকে। কিন্তু তার দেশ বাংলাদেশকে তাদের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার হিসেবে দেখতে আগ্রহী। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক, কৃষিজাত পণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের জন্য ইসোয়াতিনি একটি সম্ভবনাময় বাজার।

‘দুদেশের যৌথ অংশীদারীত্বের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারেও উৎসাহী আফ্রিকার দেশটি। ওষুধশিল্প, বায়োটেক, কনট্রাক্ট ফার্মিংসহ আইসিটি খাতে ইসোয়াতিনির পুঁজি ও বাংলাদেশের প্রযুক্তি-অভিজ্ঞতা যৌথভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে।’

এর আগে এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, বাংলাদেশ-ইসোয়াতিনির মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে এফবিসিসিআই ও আফ্রিকার দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়িক সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি সই হতে পারে।

মালয়েশিয়া থেকে ইসোয়াতিনির ভিসা নিতে হয় উল্লেখ করে এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসোয়াতিনিকে বাংলাদেশে হাইকমিশন স্থাপনের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নয়নে ভবিষ্যতে দুদেশের মধ্যে প্রতিনিধিদলের আসা-যাওয়া, ওয়েবিনার, বিটুবি বৈঠক আয়োজন করা যেতে পারে বলে মত দেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে এফবিসিসিআইযের পক্ষ থেকে সবধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. আমীন হেলালী।

এর আগে বৈঠকে ইসোয়াতিনিতে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক পণ্যের সংযোজন সম্ভাবনা, পারস্পরিক পর্যটন উন্নয়ন সহযোগীতা নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ইসোয়াতিনির বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি সেবিলি আমান্ডা এনহ্লাবাটসি, এমএসএমইয়ের পরিচালক এমলুলেকি সাখিলে দ্লামিনি, ইসোয়াতিনি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ব্যবস্থাপক ড. খানইসিয়ি দলামিনি, ইসোয়াতিনির বাংলাদেশ বিজনেস কমিউনিটির প্রতিনিধি মোহাম্মেদ আশরাফুল আলম চৌধুরী, বদরুজ্জামান চৌধুরী ও বদরুল আলম চৌধুরী।

আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক এম জি আর নাসির মজুমদার, হাফেজ হারুন, মো. আসলাম সেরনিয়াবাত, মো. নাসের, আবু হোসেন ভূঁইয়া (রানু), মোহাম্মদ আলী খোকন, উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ প্রমুখ।

সভার সঞ্চালনায় ছিলেন- এফবিসিসিআই মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। সভা শেষে ইসোয়াতিনির প্রতিনিধি দল এফবিসিসিআই কার্যালয়ের মুজিব কর্নার পরিদর্শন করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার কিনবে সরকার
পরবর্তী নিবন্ধঋণের ভালোমন্দের দায় নেবে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক