আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ২০ বছরের মধ্যে ফের ইউরো ও মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য সমতায় পৌঁছেছে। চলতি বছরের শুরুর দিকের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ মান কমে যাওয়ায় মঙ্গলবার (১২ জুলাই) ডলারের সমতায় ফিরেছে ইউরো।
বর্তমানে ১ ইউরোর মান ১ মার্কিন ডলার হয়েছে। অর্থাৎ উভয় মুদ্রার মান এখন একই হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে ইউরোপের অর্থনীতিতে মারাত্মক মন্দায় এ কারণ।
যুদ্ধের আগে রাশিয়ান পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রায় ৪০ শতাংশ গ্যাস পেতো ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বর্তমানে রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা করছে তারা। একই সময়ে ইইউর কয়েকটি দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া।
এরপর সোমবার (১১ জুলাই) সকালে রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে। ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের মূল পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম এজি দিয়ে গ্যাসের প্রবাহ আর যাচ্ছে না। ইউরোপের গ্যাস আমদানির গুরুত্বপূর্ণ সব অবকাঠামো ১০ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে জার্মান কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, নর্ড স্ট্রিম এজি আর চালু নাও হতে পারে।
এদিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের মধ্যে মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের মান গত কয়েক সপ্তাহে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি একাধিক মুদ্রার বিপরীতে মার্কিন এ মুদ্রার মান দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে।
ইউরোর মান পড়ে যাওয়ায় ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) ২০১১ সালের পর চলতি মাসে প্রথমবারের মতো সুদের হার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। ইউরোজোনের মুদ্রাস্ফীতির হার বর্তমানে ৮ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছেছে।
তবে অনেকেই বলছেন, ইসিবির সুদহার বৃদ্ধির এ পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হবে না। এ সংকট অনিবার্য। ১৯৯১ সালের পর গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো পণ্যের বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড করেছে জার্মানি। দেশটিতে জ্বালানির দাম এবং সাধারণ সরবরাহ শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ায় আমদানির ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যদিকে কড়াকড়িতে ইউরোপের তুলনায় বেশ এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ। তারা সুদের হার এরই মধ্যে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করেছে। একই সঙ্গে চলতি মাসে তা আরও বৃদ্ধি করা হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।