জঙ্গল সলিমপুরে ২০০ একর জমি চায় বিজিএমইএ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বহুল আলোচিত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে স্বতন্ত্র গার্মেন্টস পল্লি গড়ে তুলতে সরকারের কাছে ২০০ একর জমি বরাদ্দ চেয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। নগরীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ভাড়া ভবনে থাকা অন্তত দেড়শ পোশাক কারখানাকে এখানে স্থানান্তরের পরিকল্পনা তাদের। এসব কারখানায় কর্মসংস্থান হবে প্রায় ৩ লাখ শ্রমিকের। তবে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরাসরি গার্মেন্টস পল্লির পরিবর্তে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন করতে চায় জেলা প্রশাসন।
রানা প্লাজা ধসের পর অ্যালায়েন্স অ্যাকর্ডের কমপ্লায়েন্স মানতে গিয়ে শুধু চট্টগ্রামেই বন্ধ হয়ে গেছে ৬০০-র বেশি পোশাক কারখানা। বেকার হয়ে গেছেন হাজার হাজার শ্রমিক। এর মধ্যেও সাব কন্ট্রাক্টে নগরীতে দেড়শ পোশাক কারখানা রয়েছে ভাড়া করা ভবনে। আর নানা জটিলতা সত্ত্বেও এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি বছরে ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করছে।

এ অবস্থায় এসব কারখানাকে নিয়ে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে একটি স্বতন্ত্র গার্মেন্টস পল্লি গড়ে তুলতে চায় বিজিএমইএ। এ জন্য ২০০ একর জমি বরাদ্দ চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠিও দিয়েছে তারা।
বিজিএমইএ-র সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘এটা হলে উৎপাদনও বেড়ে যাবে। ভবিষ্যতে আমাদের ব্যবসা ভালো হবে। ক্রেতাদেরও আমরা আকৃষ্ট করতে পারব। এ ছাড়া, জঙ্গল সলিমপুরের আশপাশে অনেক শ্রমিক থাকেন। শ্রমিক এলাকা হওয়ায় আমাদের শ্রমিকের চাহিদাটাও মিটবে।

এক দশক ধরে পাহাড়সহ ৩ হাজার ১০০ একর সরকারি খাসজমি দখল করে রেখেছে একটি প্রভাবশালী মহল। বেহাত হয়ে যাওয়া জমি নিজেদের দখলে নিতে অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন। যেখানে গড়ে তোলা হবে আধুনিক শহরের পাশাপাশি গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ‘সেখানকার জীববৈচিত্র্য ঠিক রেখে জায়গা বরাদ্দ করা হবে। সেটা হবে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন। সেখানে পোশাক কারখানাও থাকবে। যেসব ইন্ডাস্ট্রি পরিবেশের শতভাগ কমপ্লায়েন্স করে প্রতিষ্ঠান স্থাপন করবে, তাদের আমরা সেখানে জায়গা বরাদ্দ দেব।
এ ক্ষেত্রে সব ধরনের পরিবেশ নীতিমালা মেনে সব কারখানায় সোলার সিস্টেম আর পরিবেশ দূষণ রোধে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বা ইটিপি স্থাপন করা হবে বলে জানান বিজিএমইএ-র প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, যেসব ইন্ডাস্ট্রির মালিক জমির অভাবে এগোতে পারেননি, তাদের রক্ষার জন্য পরিবেশবান্ধব ইন্ডাস্ট্রি হবে। সেই জায়গাটা খুবই সুন্দর। এই সুন্দর জায়গায় সোলার সিস্টেম চালু করা যাবে। আর সেখানে অবশ্যই ইটিপির মাধ্যমেই চলতে হবে।
২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম থেকে রফতানি হয়েছে ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর চলতি অর্থবছর ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৫৫ প্রকল্পে দেড় হাজার কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের
পরবর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আরও কমলো