নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের পর এক সপ্তাহ টানা উত্থান হয়েছে। তবে পরের সপ্তাহই আবারও টানা পতনে শেয়ারবাজার। বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসও দর পতন হয়েছে। এই নিয়ে টানা চার কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। শেয়ারবাজারের সব সূচক কমেছে। সূচকের সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পর থেকে শেয়ারবাজাওে দরপতন শুরু হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় ঢুকেছে গেছে। পাশাপাশি ডলারের বাজার প্রতিনিয়তই অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এ কারণে ভয়ে শেয়ার বিক্রি করে টাকা উঠিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এর আগে গত শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেল কেরোসিন, ডিজেল, অকটেন, পেট্রলের দাম বাড়ায় সরকার। এ পরিস্থিতিতে পর থেকে বেশ অস্থিরতার মধ্যদিয়ে পার করে শেয়ারবাজার। অথচ প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর এক্সপোজার লিমিট নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর আগের সপ্তাহে টানা পাঁচ কার্যদিবসে সূচক বেড়েছিল ৩৩১ পয়েন্ট। সেই সঙ্গে লেনদেনেও মিলেছিল ঊর্ধ্বগতি।
এরপর গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সার্কুলারে জানায়, শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনার ক্ষেত্রে শেয়ারের ক্রয়মূল্যকেই বাজারমূল্য ধরা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার জারির পর আশা করা হচ্ছিল, এবার বাজারে বিক্রয়চাপ কমবে এবং দীর্ঘমেয়াদে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু সার্কুলার জারি হলেও বাজারে এর কোন প্রভাবই দেখা গেল না। বরং বাজার উল্টোপথেই দৌড় দিচ্ছে।
গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩২.১৩ পয়েন্ট বা ০.৫১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৪৮.৭৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৮.৭০ পয়েন্ট বা ০.৬৪ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬.৫৬ পয়েন্ট বা ০.৭৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৪৫.৭১ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ১৯৪.৩৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ৫৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস হতে ২১৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭৯৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার। ডিএসইতে ৩৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৬টির বা ২৫.৪০ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ১৬৬টির বা ৪৩.৯১ শতাংশের এবং ১১৬টির বা ৩০.৬৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, মালেক স্পিনিং, সী পার্ল বীচ রিসোর্ট, সোনালি পেপার, গ্রামীণ ফোন, কপারটেক ইন্ডাঃ, অলিম্পিক ইন্ডাঃ ও একমি ফার্মা । দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড, ইন্টাঃ লিজিং, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, আরডি ফুড, এফএএস ফাইন্যান্স, রিলায়েন্স ওয়ান মি. ফা., ইবিএল এনআরবি মি. ফা., হাক্কানী পাল্প, আইএফআইসি ফার্স্ট মি. ফা. ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- জুট স্পিনার্স, হাওয়া অয়েল, গ্রামীণ ফোন, একমি ফার্মা, আমান ফীডস, সুহৃদ ইন্ডাঃ, অলিম্পিক ইন্ডাঃ, দেশবন্ধু পলিমার, মোজাফফ্র হোসেন স্পিনিং মিলস ও এসকে ট্রিমস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১০৫.০৮ পয়েন্ট বা ০.৫৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১২৭.৬৮ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৫৫টির, কমেছে ১১৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৪টির দর। সিএসইতে ১৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।