ডিএসইতে ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজার আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এই নিয়ে টানা ৫ কার্যদিবস ধরে শেয়ারবাজারে সূচক ঊর্ধ্বমুখী অব্যাহত রয়েছে। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর লেনদেন দের হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হয়েছে। যা গত ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
এদিন ব্যাংক-বীমা খাতের পতনের দিনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ওষুধ ও রসায়ন, সিমেন্ট এবং প্রকৌশল খাতের শেয়ার। এবিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা (এক্সপোজার লিমিট) নির্ধারনের ক্ষেত্রে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শেয়ার, ডিবেঞ্চার, কর্পোরেট বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট এবং শেয়ারবাজারে অন্যান্য নিদর্শনপত্রে বিনিয়োগ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে বাজারমূল্যর পরিবর্তে ক্রয়মূল্য বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন শেয়ারবাজার বান্ধব সিদ্ধান্তের কারণে টানা পতন থেকে বেরিয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে শেয়ারবাজার মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক বেড়েছে ৪০ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১২২ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম ও লেনদেন। এর ফলে শেয়ারবাজারে টানা পাঁচ কার্যদিবস সূচকের উত্থান হলো। তবে তার আগের টানা চার কার্যদিবস পতন হয়েছিল। গতকাল সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। যা চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি পর সর্বোচ্চ লেনদেন। এর আগে ২৩ জানুয়ারি লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪৮২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ডিএসইর তথ্য মতে, সোমবার বাজারটিতে ৩৪ কোটি ৬৫ লাখ ৬০ হাজার ১৫৮টি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। যার মূল্য ১ হাজার ৪৭৭ কোটি ৫৬ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৫৭ কোটি ৭৬ লাখ ২ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ৪১৯ কোটি টাকার বেশি।
গতকাল শেয়ারবাজারের সব সূচকে বেড়েছে। সূচকের সাথে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেনও বেড়েছে। ডিএসইতে ৩৮০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬৪টির বা ৪৩.১৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ১১৭টির বা ৩৩.৭৯ শতাংশের এবং ৯৯টির বা ২৬.০৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪০.৬৭ পয়েন্ট বা ০.৬৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০০.১৩ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৭.৪৩ পয়েন্ট বা ০.৫৪ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২১.১৮ পয়েন্ট বা ০.৯৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৮০.০৭ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২৪৭.৩৩ পয়েন্টে। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, অরিয়ন ফার্মা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বিএসসি, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, মেট্রো স্পিনিং, মালেক স্পিনিং, সাইফ পাওয়ার ও তিতাস গ্যাস।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ফারইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অরিয়ন ইনফিউশন, সমতা লেদার, মেট্রো স্পিনিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ফারইস্ট নিটিং, জিপিএস ইস্পাত, ফার্মা এইডস, অরিয়ন ফার্মা ও ন্যাশনাল পলিমার।

দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- ফার্স্ট ফাইন্যান্স, কে এন্ড কিউ, সান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু ফেব্রিকস, ইনটেক লিঃ, ইনফর্মেশন সার্ভিসেস নেটওয়াক, এসকে ট্রিমস, আইসিবি এএমসিএল অগ্রনী ফার্স্ট মিঃ ফাঃ, কেডিএস এক্সেসরিজ ও এমারেল্ড অয়েল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১১৫.২৭ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫০৫.৬৬ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ৩০৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৩৩টির, কমেছে ৮৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৮টির দর। সিএসইতে ৩২ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপপুলার লাইফের কুষ্টিয়া অঞ্চলের বীমা গ্রাহকের বীমা দাবীর ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠিত
পরবর্তী নিবন্ধমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেলেন ঢাকার দুই মেয়র