অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমলেও ভালো কোম্পানির দাপটে সূচকের বড় উত্থান

মাসুদ মিয়া: দেশের শেয়ারবাজার সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও বাছাই করা ভালো কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। এর ফলে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা হয়ে গেছে।

দিনের লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের আভাস পাওয়া যায়। ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। তবে লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও শেষের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। লেনদেনের শুরুর দিকে ডিএসইতে ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। সেখানে দিনের লেনদেন শেষে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি প্রতিষ্ঠান নাম লিখিয়েছে, পতনের তালিকায় নাম লিখিয়েছে তার প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান।

অবশ্য এই দরপতনের মধ্যে ভালো কোম্পানি হিসেবে বাছাই করা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। ডিএসইতে ভালো কোম্পানি হিসেবে বাছাই করা ৩০টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টির শেয়ার দাম বেড়েছ। বিপরীতে দাম কমেছে ৬টির। অপরদিকে সব মিলে ডিএসইতে ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৫টির। আর ১২৮টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।

এরপরও ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৬০০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৮৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮১৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৭৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।

ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ২৪০ কোটি ৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৯০ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, অরিয়ন ফার্মা, বিএসসি, জেএমআই হসপিটাল, শাইনপুকুর সিরামিকস, ইউনিক হোটেল, লাফার্জ হোলসিম, ডেল্টা লাইফ ইন্সুঃ, জেনেক্স ইনফোসিস ও আরডি ফুড।

দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- মিরাকেল ইন্ডাঃ, বিএসসি, এটলাস বাংলা, ন্যাশনাল টিউবস, অরিয়ন ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং, আজিজ পাইপস, আরডি ফুড, বিডি কম ও ইস্টার্ন ক্যাবলস।

দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- সোনারগাঁও টেক্সটাইল, নরদার্ন জুট, বিএনআইসিএল, সোনালি আঁশ, অ্যাম্বী ফার্মা, হাক্কানী পাল্প, এসআলম কোল্ড রোল্ড, নিটল ইন্সুঃ, সোনালি লাইফ ইন্সুঃ ও রহিম টেক্সটাইল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৯৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৬৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৪টির এবং ১০২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২ লাখ ইভিএম কিনতে ৮৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব চূড়ান্ত
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমার ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত শিগগির