নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বাজারে এবার মার্কিন মুদ্রা ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে। নিম্নমুখী প্রবণতা রয়েছে বিক্রির ক্ষেত্রেও। রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তঃব্যাংকে ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে ২ টাকা ৬০ পয়সা।
আজ বাজারের জোগান ও চাহিদা বিবেচনায় ডলারের দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)। এ দরে ডলারের ক্রয়মূল্য কমেছে। একই সঙ্গে কিছুটা কমেছে বিক্রয় মূল্যও।
বর্তমানে ডলারের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ টাকা। একইভাবে ডলারের বিক্রয়মূল্য কমেছে ১৫ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এর আগে বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১০২ টাকা ৩৭ পয়সা। এদিন ডলারের গড় ক্রয়মূল্য বাড়লেও বিক্রি করা হয় আগের দামেই অর্থাৎ ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা।
পরে একদিনের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ৪ টাকা ৫৩ পয়সা বাড়িয়ে ডলারের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০৬ টাকা ৬০ পয়সা।
আজ ডলারের বিক্রয়মূল্য ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১৫ পয়সা কমে ১০৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর গড় ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ টাকা, যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ১০৬ টাকা ৬০ পয়সা। সে হিসাবে ডলারের গড় ক্রয়মূল্য কমেছে ২ টাকা ৬০ পয়সা।
নতুন আন্তঃব্যাংকের এ দর বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক দৈনন্দিন ভিত্তিতে ডলার কেনাবেচা করবে। আর ব্যাংকগুলো প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কিনছে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা, আর রপ্তানি আয়ে ৯৯ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, বাফেদার নির্ধারিত দরে ব্যাংকগুলো নিজেরা লেনদেন করছে। বাফেদার রেট আন্তব্যাংক লেনদেন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আন্তঃব্যাংকের রেট বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার বিক্রয়ের রেট হবে না। তবে সবকিছু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি করবে।
এদিকে খোলাবাজারে নগদ ডলারের সংকট কাটছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগদ ডলারের সরবরাহ কমে যাওয়ায় কেনাবেচা কমেছে। একই সঙ্গে দামও বেড়েছে ডলারের। মানি এক্সচেঞ্চগুলোর অবস্থাও অনেকটা একই রকম।
মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে ডলার বিক্রির চেয়ে কেনাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিক্রেতারা। মূলত নগদ ডলারের সংকট থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আজ মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে ডলারের ক্রয় রেট চলছে ১০৭ টাকা ও বিক্রির ক্ষেত্রে চলছে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা।
আর খুচরায় প্রতি ডলার কেনাবেচা হচ্ছে ১১১-১১৪ টাকার মধ্যে। পল্টন, ফকিরাপুল, মতিঝিল এলাকার খুচরা ডলার বিক্রেতারা বলছেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই ডলারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এখন ডলার সরবরাহ নেই তেমন।
নগদ কিছু পেলে সেগুলো ১১১ টাকা ৫০ পয়সা-১১২ টাকার বেশি দামে কেনা পড়ছে। সেগুলো বিক্রি হচ্ছে ১১২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১১৪ টাকায়।
তবে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে ডলারের ক্রয়-বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হলেও অনেক হাউজেই নগদ ডলার নেই। বিক্রেতারা বলছেন, ডলার কেনাবেচার তালিকা আমরা দিয়েছি। ডলার পেলে ১০৭ টাকায় কিনবো, আর বিক্রি হবে ১০৮ টাকা ৫০ পয়সায়।
বাংলাদেশ মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, আজ আমরা প্রতি ডলার ১০৭ টাকায় কিনছি ও ১০৮ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করছি। তবে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ যাতায়াত কমে যাওয়ায় ডলার লেনদেন অবস্থা হতাশাজনক। খোলাবাজারে ডলার কেনাবেচা নেই বললেই চলে।