নিজস্ব প্রতিবেদক : জলবায়ু উন্নয়নে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ব্লু ও গ্রিন বন্ডকে উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় ইউনাইটেড ন্যাশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) আয়োজিত জলবায়ু উন্নয়নে অর্থায়ন নিয়ে দুই দিনের সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রথম দিনে ‘ইমপ্যাক্ট অব ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্সিং: পারস্পেক্টিভ বাংলাদেশ’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিবলী রুবাইয়াত।
সাউথ সাউথ এক্সচেঞ্জ: ইনটিগ্রেটিং জেন্ডার ইকুয়্যালিটি অ্যান্ড সোশ্যাল ইনক্লুশন ইন ক্লাইমেট বাজেটিং অ্যান্ড প্ল্যানিং প্রোসেস অ্যান্ড ইনোভেটিভ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স ইন দ্যা এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওন’শীর্ষক এ সম্মেলন চলবে বুধবার (৭ আগস্ট) পর্যন্ত।
ইউএনডিপির ক্লাইমেট ফাইন্যান্স নেটওয়ার্ক ও ইউএন উইমেনের উদ্যোগে সম্মেলনটির আয়োজনে সহযোগী হিসেবে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া সরকারের মিনিস্ট্রি অব উইমেনস এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড চাইল্ড প্রটেকশন ও মিনিস্ট্রি অব ফাইন্যান্স।
সম্মেলনে বাংলাদেশের বর্তমান জলবায়ু ও বিশ্বমন্দা, জলবায়ু অর্থায়নের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি আফ্রিকা ও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপ-আমেরিকাতেও ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটছে। এ থেকেই বোঝা যায় প্রকৃতি কতটা শক্তিশালী।
‘জীবাশ্ম জ্বালানির অত্যাধিক ব্যবহার, বন ধ্বংস, পানিসম্পদ বিনষ্টসহ মানবসৃষ্ট নানান কর্মকাণ্ডে প্রকৃতি বিনষ্ট হচ্ছে। এখন প্রকৃতি এসব থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করছে।’
জলবায়ুর পরিবর্তনে বাংলাদেশ মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান অধ্যাপক শিবলী। তিনি বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের জিরো গ্রাউন্ড বলে আখ্যায়িত করেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ সপ্তম মোস্ট ভালনারেবল দেশ ও বাংলাদেশকে বলা যায় জলবায়ু পরিবর্তনের জিরো গ্রাউন্ড। বন্যাপ্রবণ এ দেশের দুই-তৃতীয়াংশই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১৫ ফুট উচ্চতায় রয়েছে।
‘আমাদের দেশের প্রায় ৩ কোটি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন অথবা হওয়ার শঙ্কায় আছেন। মাটির লবণাক্ততা-পানির অভাবসহ জলবায়ু পরিবর্তনের নানান প্রভাবে বাংলাদেশের কৃষি ও অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।’
এ সময় শিবলী রুবাইয়াত বাংলাদেশের জলবায়ু সংশ্লিষ্ট পদক্ষেপসমূহ যেমন- ১৯৯৫ সালের পরিবেশ রক্ষা আইন, ২০১০ সালের জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইনসহ অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন।
এছাড়া তিনি বৈদেশিক ও নিজস্ব অর্থ সহায়তায় সম্পাদিত কার্যক্রমগুলোর বর্তমান-ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ব্যাখ্যা করেন। আন্তর্জাতিক কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির কথা তুলে ধরে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, ফিজি, কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জলবায়ু, লিঙ্গসমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজেটিং ও জলবায়ু অর্থায়নের ক্ষেত্রে নিজেদের সমন্বিত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।