নিখোঁজের ২৮ দিন পর মায়ের লাশ শনাক্তে খুলনা থেকে ফুলপুরে মরিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক : ময়মনসিংহের উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ নিজের মায়ের কিনা সেটি শনাক্তে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় গেছেন মরিয়ম ও তার স্বজনরা। উদ্ধার হওয়া ওই নারীর কাপড় দেখে প্রাথমিকভাবে নিজের মায়ের মরদেহ বলে জানিয়েছেন মরিয়ম।

২৮ দিন ধরে নিখোঁজ মা রহিমা বেগমের (৫৫) সন্ধানে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে ময়মনসিংহে যান মরিয়ম ও তার পরিবারের সদস্যরা। সকালে কাপড় দেখে মায়ের মরদেহ দাবি করেছেন মরিয়ম। তবে পুলিশ বলছে, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মরদেহ চূড়ান্ত শনাক্ত করা সম্ভব নয়।

ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, উদ্ধার হওয়া ওই নারীর মরদেহ অর্ধগলিত ছিল। তার কাপড় ও আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মরিয়ম ও তার বোনেরা থানায় এসেছেন। তারা মৃত ওই নারীর স্যালোয়ার দেখে বলছেন তার মায়ের সাথে মিলছে। আসলে এভাবে শনাক্ত করা সম্ভব না। ডিএনএ টেস্ট ছাড়া সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব নয়। ডিএনএ টেস্টসহ পরবর্তী ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া ওই লাশের পোশাক ও আলামত সম্পর্কে থানায় জানতে চান মরিয়ম। পোশাক ও উদ্ধার হওয়া আলামতের কথা শুনে নিজের মায়ের লাশ বলে দাবি করেন মরিয়ম।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মরিয়ম। রাত পৌনে ১২টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে মায়ের লাশ পাওয়ার বিষয়ে দেওয়া পোস্টে মরিয়ম লেখেন, ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র। ’

রাত ১২টা ৪ মিনিটে আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আর কারও কাছে আমি যাবো না। কাউকে বলব না আমার মা কোথায়! কাউকে বলবো না আমাকে একটু সহযোগিতা করুন। কাউকে বলবো না আমার মাকে একটু খুঁজে দেবেন। কাউকে আর বিরক্ত করবো না। আমি আমার মাকে পেয়ে গেছি। ’

প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে নিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।

রহিমার ৬ সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং করেন, কখনো আত্মীয়স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন করা হয়। মানববন্ধনের পর তাকে খুঁজে পেতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই তদন্তের ভার পায়। ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইয়ে স্থানান্তর করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসরবরাহ অনিশ্চতায় বিশ্ববাজারে বাড়লো তেলের দাম
পরবর্তী নিবন্ধসবজির দাম চড়া, স্বস্তি মিলছে না ডিমেও