সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজার গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার উত্থান হলেও সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস দর পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন শেয়ারবাজারে সব সূচক কমেছে। সূচকের সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দরও কমেছে। এদিকে আজকের দর পতনকে বাজার সংশ্লিষ্টরা মূল্য সংশোধন হিসাবে দেখছেন। তারা মনে করেন, টানা উত্থানের পর শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেবেন বিনিয়োগকারী, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, টানা বৃদ্ধির পর মূল্য সংশোধন হয়েছে এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক টানা বৃদ্ধি বাজারের জন্য ভালো না আবার টানা কমাও ভালো না। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইতে ২১৯ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে। ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। তবে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে। এর আগে গত সপ্তাহসহ টানা চার সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। চার সপ্তাহের টানা উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়ে ৪১১ পয়েন্ট। আর বাজার মূলধন বাড়ে ১৯ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এ পরিস্থিতিতে রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক প্রায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে এমন বড় উত্থান প্রবণতা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি। বরং লেনদেনের সময় গাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় হয়েছে দরপতনের তালিকা। ফল সবকটি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে। অবশ্য শুরুতে মূল্যসূচক বাড়লেও লেনদেনের সময় ১০ মিনিট গড়ানোর আগেই দাম বাড়ার চেয়ে দাম কমা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশি হয়ে যায়। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্যেও বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান প্রথমদিকে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়। এতে লেনদেনের প্রথম সাড়ে তিন ঘণ্টা সূচক ঊর্ধ্বমুখীই থাকে।
কিন্তু লেনদেনের শেষ আধঘণ্টায় গড়পড়তা সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে সূচকের পতন আটকানো যায়নি। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টির এবং ১০৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৫৩৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। বাকি দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সবকটি মূল্যসূচকের পতনের সঙ্গে ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬৯১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৭৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৮৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৫১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার ২০১ কোটি ২৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬৬ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাহিনপুকুর সিরামিকস। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, অরিয়ন ফার্মা, শাইনপুকুর সিরামিকস, লাফার্জহোলসিম, বেক্সিমকো ফার্মা, অরিয়ন ইনফিউশন, নাহী অ্যালুমিনিয়াম, এসিআই ফর্মূলেশন, বিএসসি ও জেএমআই হসপিটাল। দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- আরএসআরএম স্টীল, শাইনপুকুর সিরামিকস, ইয়াকিন পলিমার, কোহিনুর কেমিক্যাল, সী পার্ল বীচ, বেক্সিমকো লিঃ, আইডিএলসি, এসিআই ফর্মূলেশন, ইস্টার্ন হাউজিং ও ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং। দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বীকন ফার্মা, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ফাইস্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স, পেপার প্রসেসিং, সোনারগাঁ টেক্সটাইল, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, মালেক স্পিনিং, তমিজুদ্দিন টেক্সটাইল ও সিলভা ফার্মা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬০টির এবং ৬৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরূপালী ব্যাংকের ১০০ দিনের বিশেষ কর্মসূচী ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধরেমিট্যান্স ও রপ্তানিতে ডলারের অভিন্ন রেট নির্ধারণ