দুই কার্যদিবস পর উত্থানে ফিরেছে শেয়ারবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শেয়ারবাজার পরপর দুই কার্যদিবস পতনের পর মঙ্গলবার উত্থানে ফিরেছে। এদিন শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক বেড়েছে। সূচকের সাথে টাকার পরিমাণে লেনদেনও বেড়েছে। তবে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর আগের দিনের মতো অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিন ব্যাংক বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতের কল্যানে দুই কার্যদিবস পর উত্থানে ফিরেছে শেয়ারবাজার। এদিকে দুই কার্যদিবস পর উত্থানকে বাজার সংশ্লিষ্টরা ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন। তারা মনে করেন, পতনের পর উত্থান হবে এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক। বাজার সংশ্লিষ্টরা আরও মনে করেন, টানা বৃদ্ধি বাজারের জন্য ভালো না আবার টানা কমাও ভালো না।
দিনভর সূচক ওঠানামা শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচক বেড়েছে ৯ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। সূচকের পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আগের দিনের মতো আজও শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির চাপের মধ্যদিয়ে লেনদেন শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা সংকট দেখা দেয়। অবস্থা এমন হয় যে প্রায় ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা ছিল না। তবে বাজারের চিত্র পাল্টে যায় বস্ত্র ও প্রকৌশল খাতের শেয়ারের চমকে। এদিন প্রকৌশল খাতের ৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির দাম বেড়েছে, কমেছে ১১টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৪টির, তার বিপরীতে কমেছে সাতটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। বাকি ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়াও ব্যাংক খাতের ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টির, কমেছে ৪টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম। এই তিন খাতের শেয়ারের দাম বাড়ায় উত্থানে ফিরেছে দেশের শেয়ারবাজার।

ডিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৮০ কোটি ৭ লাখ টাকার। যা আগের দিন থেকে ১১৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৩৬০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭৭টি কোম্পানির শেয়ারের। এর মধ্যে ১২৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১০৮টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৪০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম। অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচক বাড়লেও কমেছে অন্য দুই সূচক। এর মধ্যে ডিএসইএস শরীয়াহ সূচক ২ দশমিক ৫০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪২৬ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ৩ দশমিক ১১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৩৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- বেক্সিমকো লিঃ, অরিয়ন ফার্মা, জেএমআই হসপিটাল, বিএসসি, আইপিডিসি, শাইনপুকুর সিরামিকস, লাফার্জহোলসিম, মালেক স্পিনিং, শাহজিবাজার পাওয়ার ও অরিয়ন ইনফিউশন।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- সোনারগাঁ টেক্সটাইল, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, বিডি ল্যাম্পস, মেট্রো স্পিনিং, সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ, জেএমআই হসপিটাল, আরডি ফুডস, বিডিকম অনলাইন, আরএসআরএম স্টীল ও আইপিডিসি।
দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো:- নাহী অ্যালুমিনিয়াম, এসিআই ফর্মূলেশন, ইস্টার্ন হাউজিং, বীকন ফার্মা, এফএএস ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, উত্তরা ফাইন্যান্স, ইউপিজিএল, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ও এসকে ট্রিমস।

দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ২৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ বাজারে ২৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ৮৫টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ২ লাখ ৭৪ হাজার ২০৮ টাকার শেয়ার। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৭ কোটি ৯২ লাখ ৮৫ হাজার ৩৮৪ টাকার শেয়ার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোনো জমি অনাবাদি না রেখে চাষাবাদ বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধরকেট বন্ধ থাকবে ২০ ঘণ্টা