আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমাদের আপত্তি সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেলসহ বিভিন্ন ধরনের জরুরি পণ্য কিনতে আলোচনা চালাচ্ছে ফিলিপাইন। ইউক্রেন যুদ্ধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক উদ্বেগের চেয়ে জাতীয় স্বার্থ বড় হওয়ায় ফিলিপাইন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
মার্কোস বলেছেন, তার দেশ কেবল পুরোনো সরবরাহকারীদের ওপর নির্ভর করেই সন্তুষ্ট থাকতে পারে না। তাই খাদ্যসামগ্রী ও সারের মতো জরুরি পণ্যগুলোর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরবরাহ ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনতে রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে ফিলিপাইন।
তিনি বলেন, এখন আমাদের রাশিয়ার কাছে যেতে হবে। তারা হয়তো কিছুটা ছাড় দিয়ে জ্বালানি সরবরাহ করতে পারে।
এ বিষয়ে রাশিয়াসহ অন্য সরবরাহকারীদের সঙ্গে চুক্তির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন বলেও জানিয়েছেন ফিলিপিনো প্রেসিডেন্ট।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে অন্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে নিউইয়র্কে রয়েছেন ফার্দিনান্দ মার্কোস। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সেখান থেকেই ব্লুমবার্গকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বলেন, এর রাজনৈতিক দিক কিছুটা জটিল হয়েছে। তবুও জাতীয় স্বার্থই সবার আগে।
তিনি বলেন, আমাদের জ্বালানির সেই নতুন উৎসগুলো খুঁজে বের করতে হবে। তবে এটি কেবল জ্বালানির ক্ষেত্রেই নয়, খাদ্য, সারসহ অন্যান্য জরুরি জিনিসগুলোর জন্যেও প্রযোজ্য।
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়াকে একঘরে করার যে চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো, তা উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর সামনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কত বড় চ্যালেঞ্জ দাঁড় করিয়েছে, সেটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ফিলিপিনো প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য।
এ সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রেসিডেন্ট মার্কোস। ২০২৮ সাল পর্যন্ত কমপক্ষে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে তার সরকার, যা দেশটিকে প্রাক-মহামারি প্রবৃদ্ধির পর্যায়ে ফিরিয়ে নেবে।
কিন্তু এটি করতে গিয়ে কঠিন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে ফিলিপাইনকে। বিশ্বব্যাপী নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে পেসোর রেকর্ড দরপতন এটিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলতি বছরে এ পর্যন্ত সুদের হার ২২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।