নিজস্ব প্রতিবেদক : রপ্তানিকারী পোশাক কারখানাগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চেয়ে চিঠি দিয়েছে রপ্তানি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। চিঠির অনুলিপি যুগপৎ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর দফতর ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে দিয়েছে সংগঠনটি।
রোববার (২ অক্টোবর) বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসানের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, শতভাগ রপ্তানিকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে অগ্রাধিকারভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধিগণের সঙ্গে গত ১২ সেপ্টেম্বর আপনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভাকক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার মূল প্রতিপাদ্য ছিল জ্বালানি সংকট থেকে উত্তরণের উপায় বের করা।
দেশের শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশ সরকার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। উক্ত প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি পোশাক কারখানাসমূহ ভিন্ন ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক ছুটি পালন করে আসছে। বিজিএমইএ-তেও সাপ্তাহিক ১দিন ছুটির পরিবর্তে ২দিন ছুটি পালন করা হচ্ছে এবং প্রাত্যহিক কাজের সময় ১ঘণ্টা হ্রাস করা হয়েছে। এতে করে কিছুটা হলেও জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম বরাবর লিখিত ওই চিঠিতে বলা হয়, আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, তৈরি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাসের চাপ কম থাকায় এবং অনিয়মিত গ্যাস সরবরাহের কারণে উৎপাদন কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সকাল ৮টার পর থেকে গ্যাসের প্রেসার কমে জিরো পিএসআইতে নেমে আসে, আবার রাত ১১টার পর কিছুটা উন্নতি হয়। যার কারণে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। এতে রপ্তানি আদেশ অনুযায়ী লীড টাইম মোতাবেক তৈরি পোশাক সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফলে তৈরি করা পণ্য এয়ার শিপমেন্ট করতে হচ্ছে, এতে করে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠান ও দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ শিল্পটি অনেক বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করে আজ অত্যাধুনিক ও নিরাপদ পোশাক উৎপাদনের সবুজ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮২ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ খাতে গত ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরে ১২.৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৪২.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জন হয়।
আগামী ২০৩০ সালে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে কাজ করছে বিজিএমইএ এমন তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখতে জরুরি ভিত্তিতে এ খাতে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ করা আবশ্যক।
এমতাবস্থায়, বর্ণিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন অব্যাহত রাখা তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে জরুরীভিত্তিতে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।