নিউজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেন, আগামী বছর পযর্ন্ত বিশ্বব্যাপী মন্দাঝুঁকি বেড়ে চলেছে। আমরা হিসাব করে দেখেছি, অন্তত দুটি অর্থবছরে এক তৃতীয়াংশ বিশ্ব অর্থনীতির খারাপ সময় যাবে। এ মন্দাভাবের কারনে এখন থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত বিশ্ব চার ট্রিলিয়ন ডলার হারাবে।
সোমবার (১১ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংকের আইএমএফ বার্ষিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জর্জিভা বলেন, করোনার কারনে বাজারে যোগানের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ফসল উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। এতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বিপরীতে অর্থসংকটের ফলে প্রতিটি দেশই ভুগছে।
সভায় বিশ্বব্যাংকের সভাপতি ডেভিড ম্যালপাস বলেন, বাংলাদেশের মতো যেসব উন্নয়নশীল দেশ বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ঋণ নেয়, তাদের অনেকেই ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। এখন বহুজাতিক ব্যাংক উন্নয়ন সহযোগিদের একত্রে আমাদের ওই জায়গায় গুরুত্ব দেওয়া দরকার। ৪৪ বিলিয়ন ডলারের কিস্তি যে সময় মতো পরিশোধ দেওয়া হবে না সে ব্যপারে তাদের স্বস্তি দিতে হবে।
অবশ্য এরই মধ্যে জাতিসংঘ বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। জাতিসংঘ বলেছে, বিশ্বমন্দা দ্বারপ্রান্তে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা (আঙ্কটাড) যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে- মুদ্রা, রাজস্বনীতি ও সুদের হার বৃদ্ধিসহ নানাবিধ কারণে বিশ্ব একটি বৈশ্বিক মন্দা ও স্থবিরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বে।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে সাতজন মনে করেন- ২০২৩ সালে বৈশ্বিক মন্দা দেখা দিতে পারে। যতই দিন যাচ্ছে বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা ও সতর্কতা জোরালো হচ্ছে। উন্নত অর্থনীতিতে সুদের হার বৃদ্ধির কারণে প্রায় ৯০টি উন্নয়নশীল দেশের মুদ্রা এ বছর ডলারের বিপরীতে দুর্বল হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি আগামী বছর বিশ্বব্যাপী কী হতে পারে তার একটি আভাস দেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রস্তুতি নিয়েও কথা বলেন।
বাংলাদেশ কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, তা নিয়ে বিবিসি বাংলা একটি প্রতিবেদন প্রচার করেছে, যেখানে রপ্তানি আয় কমে যাওয়া, আমদানি করা খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়া ও রেমিট্যান্স কমে যাওয়া ও তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়ার মতো বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পায়।