ক্রীড়া ডেস্ক : ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের জমজমাট মঞ্চ সাজানো থাকবে আর সেখানে মেসি কিংবা রোনালদো, অথবা দুজনই উপস্থিত থাকবে, তা যেন একটা অলিখিত নিয়মই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গত ১৫টি বছর তো তেমনই দেখা যাচ্ছিল।
সেই ২০০৭ সাল থেকে শুরু। ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের মঞ্চ আলোকিত হয়ে উঠতো মেসি-রোনালদোদের আলোয়। দু’জন একসঙ্গে না থাকলে অন্তত একজন হলেও থাকতেন সেরাদের ওই মঞ্চে।
সেরাদের বলতে, সেরা তিনজন। যিনি ব্যালন ডি’অর জয় করেন এবং তার সঙ্গে দ্বিতীয় ও তৃতীয় জন। সেরার এই তালিকায় আর্জেন্টাইন এবং পর্তুগিজ ফুটবলারের অংশগ্রহণ শুরু হয়েছিল ২০০৭ সালে। সর্বশেষ ২০০৬ সালে দেখা গিয়েছিল মেসি-রোনালদোকে ছাড়া পোডিয়াম।
২০০৭ সালে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন ব্রাজিলের কাকা। দ্বিতীয় হয়েছিলেন রোনালদো, তৃতীয় হয়েছিলেন মেসি। পরের বছরই প্রথমবারের মত ব্যালন ডি’অর হাতে তুলে নেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সেবার দ্বিতীয় হলেন মেসি।
ওই বছর থেকেই কখনো রোনালদো, কখনো মেসি- এভাবেই চলে আসছিল ব্যালন ডি’অর জয়ীর তালিকা। ২০১০ সাল থেকে ব্যালন ডি’অর আবার ফিফার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। নাম হয় ফিফা ব্যালন ডি’অর।
যার প্রথম তিনটা শিরোপাই উঠে মেসির হাতে। মোট টানা চারটি ব্যালন ডি’অর জিতলেন মেসি। এর মধ্যে তিনবার দ্বিতীয় হন রোনারদো। ২০১৩-১৪ টানা দুইবার জিতলেন রোনালদো। মেসি হলেন দ্বিতীয়। ২০১৫ সালে এসে আবারও জিতলেন মেসি।
২০১৬ সাল থেকে ফিফা এবং ব্যালন ডি’অর আলাদা হয়ে যায়। আগের জায়গায় তথা ফ্রেঞ্চ ফুটবল ম্যাগাজিনের অধীনে চলে আসে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেয়ার কর্তৃত্ব। ২০১৬ এবং ২০১৭ টানা দুই বছর জিতলেন রোনালদো।
২০১৮ সালেও রোনালদোর জেতার কথা ছিল। কিন্তু বলা হয়ে থাকে, রিয়াল ছাড়ার কারণে সেবার আর পুরস্কারটা তার কপালে জোটেনি। পেয়েছিলেন লুকা মদ্রিচ। প্রথমবারের মতো মেসি-রোনালদোর সাম্রাজ্যে ভাগ বসান তিনি। মেসি সেবার পোডিয়ামে উঠতে না পারলেও রোনালদো ছিলেন। তিনি হয়েছিলেন দ্বিতীয়।
পরেরবার পুরস্কারটা উঠলো মেসির হাতেই। রোনালদো হলেন তৃতীয়। অর্থাৎ দু’জনই ছিলেন পোডিয়ামে। করোনার কারণে ২০২০ সালের ব্যালন ডি’অর বাতিল করে দেয়া হয়। না হয় রবার্ট লেওয়ানডস্কিই জিততে পারতেন সেবারের শিরোপাটি। ২০২১ সালে এসে আবারও শিরো উঠলো মেসির হাতে এবং সপ্তমবারের মত। যদিও এবার পোডিয়ামে ছিলেন না রোনালদো। তবুও, মেসি তো ছিলেন!
কিন্তু ২০০৭ সালের পর এবারই প্রথম ব্যালন ডি’অর পোডিয়ামে জায়গা পেলেন না মেসি কিংবা রোনালদোদের কেউই। এবার করিম বেনজেমার সঙ্গে পোডিয়ামে উঠলেন যথাক্রমে সাদিও মানে এবং কেভিন ডি ব্রুইন। শুধু তাই নয়, সেরা ১০ জনের তালিকাতেও ঠাঁই হলো না এই দুই ফুটবলারের। ২০ নম্বরে রোনালদোর নাম থাকলেও সেরা ৩০ জনে ছিল না মেসির নামও।