আইএমএফের ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী জ্যেষ্ঠ সচিব

নিউজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন। বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে আইএমএফ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আজ ছিল প্রথম মিটিং। মিটিং শুরু হয়েছে, সামনে আরও আলোচনা চলবে।

এদিকে ১৫ দিনের সফরে ঢাকায় এসেছে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল। আইএমএফ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে এ দল ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবে।

এ সময় তারা বাংলাদেশের জন্য ঋণ কর্মসূচি এবং নতুন করে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ দিতে আর্থিক খাতের সংস্কার ও নীতি নিয়ে আলোচনা করবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারক এবং অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করবে প্রতিনিধি দল।

এর আগে গত জুলাইয়ে আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ। লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখা ও বাজেট সহায়তার জন্য চাওয়া হয় এ ঋণ।

ঋণের মধ্যে ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তার জন্য ১৫০ কোটি করে ৩০০ কোটি ডলার চায় বাংলাদেশ। বাকি ১৫০ কোটি ডলার চাওয়া হয় আইএমএফের নতুন উদ্যোগ, সহনশীলতা ও টেকসই সহায়তা তহবিল (ট্রাস্ট) থেকে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন

এ ঋণ দিতে আবার বেশকিছু সংস্কার কার্যক্রমের সুপারিশ করে আইএমএফ। এগুলো হলো করপোরেট সুশাসন আরও বলিষ্ঠ করা, বর্তমান অবকাঠামোর ওপর তদারকি আরও কঠোর ও এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা, ঋণদাতাদের অধিকার প্রয়োগের জন্য আরও বলিষ্ঠ সহযোগিতা ও ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিতে আইনি ব্যবস্থার যথোপযুক্ত সংস্কার।

এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রমকে গতিশীল করার অনুরোধ জানিয়েছে আইএমএফ। রাজস্ব বাড়াতে তারা ভ্যাট অবকাঠামোর সরলীকরণ, রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন ও বড় করদাতাদের কাছ থেকে ঠিকমতো কর আদায় করতে না পারার ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থাপনার মতো লক্ষ্য নির্ধারণের সুপারিশও করেছে।

ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু সুপারিশ করে আইএমএফ। তারা বলছে, ব্যাংক খাতে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে এ সমস্যা অনেকটাই প্রকট।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন সম্প্রতি শেষ হয়েছে। ওই সম্মেলনে যোগ দেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশের পক্ষে সম্মেলনে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

ওই সম্মেলনে ১৬ অক্টোবর আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন গভর্নর। তখন তিনি জানান, আইএমএফ মৌখিকভাবে ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে ঋণ দিতে বাংলাদেশকে নানামুখী শর্তও দেবে আইএমএফ।

এসব শর্তগুলো তুলে ধরে গভর্নর বলেছিলেন, আইএমএফ চায় বাংলাদেশের রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন হোক। রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রম গতিশীল হোক। মোট দেশজ উৎপাদন- জিডিপির তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের অনুপাত কম। দীর্ঘদিন ধরে তা ৭ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে আছে। এ হার দক্ষিণ এশিয়ায় মধ্যে সর্বনিম্ন। এছাড়া ব্যাংক খাতে বর্তমানে রয়েছে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ। আইএমএফ এ খাতে শৃঙ্খলা চায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখেলা দেখতে প্রথমবারের মতো ই-টিকিট আনলো সাকিবের মোনার্ক মার্ট
পরবর্তী নিবন্ধঅর্থনীতির সুদিন ফেরাতে বিশ্বনেতাদের তাগিদ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের