ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সাড়ে ৪ হাজার মোবাইল টাওয়ার অচল

নিউজ ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্কে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। এসময় চার হাজার ৫৬৩টি টাওয়ার অচল হয়ে পড়ে।

ফলে ভয়েস কল, এসএমএস এবং ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হয়।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, আগের দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার অচল টাওয়ারের মধ্যে সচল হয়েছে ৬৮৪টি।

মোবাইল অপারেটরদের দেওয়া তথ্যে গ্রামীণফোনের ১ হাজার ৬৮৩টির মধ্যে ৫৩৪টি, রবির ১৩৬৭টির মধ্যে ৮০টি, বাংলালিংকের ১০৭৫টির মধ্যে মাত্র ২টি এবং টেলিটকের ৪৩৮টির মধ্যে ৬৮টি সচল করা গেছে।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। ঘূর্ণিঝড়টি মধ্যরাতে শক্তি হারিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়। এটি ধীরে ধীরে আরও দুর্বল হয়ে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস।

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম জানান, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বিকল্প পন্থায় ব্যাটারি এবং জেনারেটর ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক চালু রাখতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুততম সময়ে নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক করার সব প্রস্তুতি আমরা গ্রহণ করেছি।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটব এক বিবৃতিতে জানায়, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতের কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়েছে। এমতাবস্থায় মোবাইল অপারেটররা বিকল্প পন্থায় ব্যাটারি এবং জেনারেটর ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। টেলিকম সেবাকে জরুরি সেবা হিসেবে বিবেচনায় রেখে জনস্বার্থে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগ এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ করছি আমরা।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এক বিবৃতিতে জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সিত্রাংয়ের আঘাতে দেশের অনেকাংশে বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিটিআরসি টাওয়ার কোম্পানিদের লাইসেন্স প্রদান করলেও এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ এর ঘন ঘন লোডশেডিং চলমান থাকা সত্ত্বেও ডিজেলচালিত স্বয়ংক্রিয় অটোমেটিক জেনারেটর রাখার বাধ্যতামূলক নির্দেশনা জারি না করা দুঃখজনক। যদিও টাওয়ার কোম্পানি এবং মোবাইল অপারেটররা দাবি করে তাদের পাওয়ার ব্যাকআপ রয়েছে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। কিন্তু বর্তমান সময়ে জ্বালানি সংকটের কারণে এ পাওয়ার ব্যাকআপ উপযোগী নয়। নিরবিচ্ছিন্ন মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা চালু রাখতে হলে স্বয়ংক্রিয় ডিজেল চালিত জেনারেটর রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে বিটিআরসিকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে পাঁচ জেলায় ১১ জনের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধসারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল শুরু