নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের অনেক কোম্পানি তাদের কার্যক্রম শুরু করার পর এক সময় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এর একমাত্র কারণ সুশাসন নেই। সুশাসনের অভাবে দেশের অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে ডিজিটাল প্লাটফর্মে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টর রিজিলিয়েন্স’ শীর্ষ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম এসব কথা বলেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম।
রুমানা ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে এখন ডে ট্রেডার বেশি, দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করবে এমন বিনিয়োগকারী কম। বিনিয়োগকারীরা মার্কেটে বিনিয়োগ করার পরপরই গেইন করতে চায়। এতে অনেক ঝুঁকিতে পড়ে বিনিয়োগকারীরা। তবে ঝুঁকি কম দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে। আর সাসটেইনেবল ফাইন্যান্সে এ কথাই বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের কোম্পানিগুলোতে প্রথম প্রজন্মের হাতে ভালো চললেও দ্বিতীয় প্রজন্মের কাছে গিয়ে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণ কোম্পানিগুলোতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। সুশাসনের অভাবে অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের কোম্পানিগুলোকে সুশাসনের মধ্যে আনতে হবে। সুশাসনের আওতায় আনতে পারলে কোম্পানিগুলো সচল থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মার্কেটে দেখা যায় বিনিয়োগকারীরা শুধু সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করছে। এর বাইরে মিউচুয়াল ফান্ড আছে, বন্ড আছে এসব বিষয়ে তাদের গুরুত্ব নেই। এর কারণ সচেতনতার অভাব। তাই বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে হবে।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, সব বিনিয়োগকারীদের উচিত আপদকালীন ফান্ড রাখা। তা না করে সব ফান্ড পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে ফেললে জরুরি প্রয়োজন হলে ক্ষতি করে অর্থের যোগান দিতে হয়।
তিনি বলেন, আমরা সঞ্চয়ের সব টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে লোন নিয়ে, সম্পদ বিক্রি করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করি। যেহেতু পুঁজিবাজার ঝুঁকির জায়গা, এজন্য আপনারা (বিনিয়োগকারীরা) সঞ্চয়ের একটা অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করুন।
তিনি আরও বলেন, ১০ টাকার শেয়ার ৫০০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে। অনেকে সেটা না জেনেই ৫০০ টাকায় বিনিয়োগ করে। এভাবে বিনিয়োগ করলে হবে না। বিনিয়োগ করতে হবে ইল্ড (লভ্যাংশের হার) দেখে। তা না করার কারণেই বিনিয়োগকারীরা হতাশায় ভোগে। আর কিছু ক্ষেত্রে ক্যাপিটাল গেইন করতে হবে।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সাইফুর রহমান আরও বলেন, বিনিয়োগ করতে হবে রিসার্স করে। কতটুকু বিনিয়োগ করলে একজন বিনিয়োগকারী সাসটেইন করতে পারবে সেটাও তার চিন্তা করতে হবে। তাছাড়া একটি কোম্পানিটিতে বিনিয়োগের আগে জানতে হবে কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন, কোম্পানিগুলো ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে কিনা সেগুলো দেখে বিনিয়োগ করতে হবে। অপরদিকে, বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনতে হবে। একটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ না করে অনেকগুলো কোম্পানিতে করতে হবে। তাতে একটি কোম্পানির দাম পড়ে গেলেও একজন বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই)ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম ফারুক বলেন, আমাদের বিনিয়োগকারীদের লিটারেট করতে হবে। তারা যাতে বুঝে শুনে বিনিয়োগ করতে পারে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে হবে তারা যাতে ঝুঁকি কম রয়েছে এমন শেয়ারে বিনিয়োগ করে।