নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলা তদন্ত করবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) কিংবা শুক্রবার এ মামলা ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রামপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। আজ কিংবা আগামীকাল মামলাটির সব কাগজপত্র ওই সংস্থার কাছে চলে যাবে।’
এদিকে, ফারদিনের বাবা নুর উদ্দিন রানার দায়ের করা মামলায় নিহতের বান্ধবী ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মৃত্যুর আগে ফারদিনের সঙ্গে বুশরাই ছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডে বুশরার সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ কারণে ঘটনার পরপরই তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।
তবে, বুশরা এ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এখনো মুখ খোলেননি বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান।
তিনি বলেছেন, ‘বুশরা এবং ফারদিনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না, তা এখনো পরিষ্কার হওয়া যায়নি। আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, ফারদিনের সঙ্গে বুশরার বন্ধুত্ব ছিল। হত্যার কারণ এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত, সে বিষয়ে জানতে আমরা বুশরাকে আদালতে নিয়ে তার রিমান্ড চেয়েছি।’
নিহতের বাবা রানা রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘ফারদিনকে হত্যা করা হয়েছে। ফারদিনের সঙ্গে কারো শত্রুতা ছিল না। যেদিন তার লাশ পাওয়া গেছে, সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে বাসায় এসে পরিবারের সবার সঙ্গে খাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু, এর আগে থেকেই তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। ফারদিনের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগও করেছি। কেউই তার সন্ধান দিতে পারেনি। আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। অভাবের সংসারে সে-ই ছিল আমার ভবিষ্যত। তার মৃত্যুতে আমি নিরুপায় হয়ে গেলাম। বেঁচে থেকেও মরে গেছি। আমার মতো কোন বাবাকে যেন এভাবে আর সন্তানকে হারাতে না হয়।’
উল্লেখ্য, ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। পরে তা ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। ফারদিনের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার নিহতের বাবা বাদী হয়ে রামপুরা থানায় বুশরার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করেছে।