রোববার চালু হচ্ছে ‘বিনিময়’

নিউজ ডেস্ক : ব্যাংক, মোবাইল ব্যাংকিং বা এমএফএস ও পিএসপির মধ্যে আন্তঃলেনদেন ‘বিনিময়’ চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সেবার মাধ্যমে বিকাশ থেকে রকেটে অথবা উপায় থেকে এমক্যাশে বা বিকাশে কিংবা ব্যাংকে তাৎক্ষণিক লেনদেন করা যাবে একটি অ্যাকাউন্ট দিয়ে।

আগামী রোববার (১৩ নভেম্বর) ডিজিটাল লেনদেনের এ প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে।

রোববার রাজধানীর র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ ব্যাংক।

গ্রাহকের বাণিজ্যিক ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসেস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানে অ্যাকাউন্ট থাকলে এ সেবা নিতে পারবে। অর্থাৎ গ্রাহকের এমএফএস বা ব্যাংকের যে কোনো অ্যাকাউন্ট দিয়ে বিকাশ, রকেটে উপায় কিংবা এমক্যাশে ‘বিনিময়’ ব্যবহার করে টাকা লেনদেন করতে পারবেন। এতদিন শুধু বিকাশ দিয়ে বিকাশে বা রকেট দিয়ে রকেটে টাকা পাঠানো যেত। এখন যেকোনো অপারেটরে টাকা পাঠানো যাবে।

এজন্য গ্রাহক তার ব্যাংক বা এমএফএস অ্যাপে ‘বিনিময়’ আইকন থেকে এই আইডি খুলতে পারবেন। ‘বিনিময়’ ব্যবহার করে কোনো ঝামেলা ছাড়াই সহজে ও দ্রুত লেনদেন করতে পরবে। এ ক্ষেত্রে শুধু অন্যের ভার্চুয়াল আইডি দিলেই চলে যাবে টাকা। নাম, ব্যাংক বা অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়ারও প্রয়োজন হবে না। প্রাথমিকভাবে ছোট পরিসরের লেনদেন সম্পন্ন করার সুযোগ মিলবে এ ব্যবস্থা থেকে।

প্রাথমিকভাবে ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লেনদেন শুরু হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৮টি ব্যাংক হলো, সোনালী, ব্র্যাক, ইউসিবি, ইস্টার্ন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, পূবালী, আল-আরাফাহ ইসলামী ও মিডল্যান্ড ব্যাংক।

তিন এমএফএস প্রতিষ্ঠান হলো, বিকাশ, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের রকেট ও ইসলামী ব্যাংকের এম ক্যাশ। এর বাইরে টালি পে নামের একটি পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) যুক্ত হবে।

‘বিনিময়’এর চার্জ কত?

‘বিনিময়’ নামে নতুন এ সেবার লেনদেনসহ অন্যান্য চার্জ, ফি কত হবে তা নির্ধারণ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট চার্জ ফি চূড়ান্ত করে একটি সার্কুলার জারি করেছে।

এতে বলা হয়েছে, ইন্টারঅপারেবল ডিজিটাল ট্রানজেকশন প্ল্যাটফর্ম (আইডিটিপি) ‘বিনিময়’ ব্যবহার করে যে কোন অংকের প্রতিটি লেনদেনে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান প্ল্যাটফর্মকে ৫০ পয়সা দেবে। ব্যাংক ছাড়া অন্যদের ইন্টারঅপারেবল চার্জ দিতে হবে, যা অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে দেবে। ইন্টারঅপারেবল ফি গ্রাহক থেকে নেওয়া যাবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার অনুযায়ী, বিনিময় প্ল্যাটফর্ম থেকে ব্যাংক টু ব্যাংক যেকোনো অংকের লেনদেনে গ্রাহক থেকে সর্বোচ্চ ১০ টাকা দিতে হবে।

ব্যাংক থেকে পিএসপি এবং এমএফএস লেনদেনে গ্রাহক থেকে কোনো চার্জ দিতে হবে না।

এমএফএস ও পিএসপির ক্ষেত্রে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ হারে চার্জ দেবে।

এমএফএস ও পিএসপি থেকে ব্যাংক লেনদেনে গ্রাহক থেকে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ ফি আদায় করা যাবে। এখানে কোনো ইন্টারঅপারেবল চার্জ লাগবে না। তবে পিএসপি টু পিএসপি ও এমএফএস লেনদেনে গ্রাহক থেকে নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। এক্ষেত্রে ইন্টার অপারেবল চার্জ হিসেবে অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে দেবে দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে।

বিনিময় ছাড়াও শুধু আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তিতে বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশ অটোম্যাটে চেক প্রোসেসিং সিস্টেম (বিএসিপিএস) ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে কোনো চার্জ নেয় না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিএসিপির ক্ষেত্রেও ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চেক নিষ্পত্তি হয় ফ্রি। আর ৫০ হাজার টাকার বেশি থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতি লেনদেনে ১০ টাকা এবং এর বেশি হলে ৪০ টাকা নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন), ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ (এনপিএসবি) এবং রিয়েল টাইটম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) ব্যবস্থায় লেনদেনে গ্রাহক বা ব্যাংকগুলোকে কোনো চার্জ, ফি বা কমিশন দিতে হয় না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগ্রামে গিয়ে অনাবাদি জমি চাষ করুন : যুবকদের প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবগুড়ার ধুনটে ইসলামী ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন