ডিসেম্বরের পর মিলবে না খোলা তেল

নিউজ ডেস্ক : ডিসেম্বরের পর বাজারে আর মিলবে না খোলা সয়াবিন এবং পাম তেল। ফুড গ্রেড বোতল বা প্লাস্টিক ফয়েলে বাজারজাত করা হবে ভোজ্যতেল। নিশ্চিত করতে হবে ভিটামিন ‘এ’র প্রয়োগও। জানুয়ারি থেকে বাজার তদারকিতে সারাদেশে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে সরকার। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে চাহিদার শতভাগ তেল প্যাকেটজাত করা অসম্ভব বলছেন উৎপাদকরা।

মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে বিশ্বের নানা দেশে দুধ কিংবা ভেজিটেবল অয়েলের মতো খাদ্য পণ্যে বাধ্যতামূলকভাবে ভিটামিন ‘এ’ মেশানো হয়। বাংলাদেশে ২০১৩ সাল থেকে আইন করে সয়াবিন ও পাম অয়েলে ভিটামিন ‘এ’ মেশানো বাধ্যতামূলক করা হলেও এখনও সেটা বাস্তবায়িত হয়নি।

বিএসটিআই পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে দেশে ৪৭ শতাংশ খোলা এবং ১৩ শতাংশ বোতলজাত ভোজ্যতেলে এখনও ভিটামিন ‘এ’র উপস্থিতি নেই।

তার উপর আমদানি করা ৭০ শতাংশ তেল পাম এবং ৩০ শতাংশ সয়াবিন তেল হলেও বেশিরভাগই খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল নামে। দাম কিছুটা কম থাকায় বিপুল সংখ্যক মানুষ এমন তেল কিনে রীতিমতো প্রতারিত হচ্ছেন।

গ্রাহকরা জানান, খোলা তেল নিলে লিটারে ১০ টাকা কম লাগে। কোনটায় ভিটামিন বেশি এরকম চিন্তা করে তো আমরা এগুতে পারবো না। আরেকজন জানান, গরমের দিনে পাম তেল সয়াবিনের মধ্যে মেশানো হয়।

এ অবস্থায় কয়েক দফা সময় পেছনোর পর অবশেষে স্থায়ীভাবে বাজার থেকে খোলা তেল বিক্রি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য অধ্যাপক ডা. আবদুল আলীম বলেন, “পাম পামই হয়ে যাবে, সয়াবিন সয়াবিন হয়ে যাবে। যদি কেউ মিক্সড করে প্যাকেট করে এজন্য আমরা নিয়মিত টেস্ট করে থাকি। এটা ধরা পড়লেই সেই কোম্পানিকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বাজারে খোলা তেল বেশি বিক্রি হয় কিন্তু ওই তেলে ভিটামিন ‘এ’ মেশানো হয় না। যেটা সাধারণ মানুষের জন্য খুবই দরকার। যখন প্যাকেটজাত হবে তখন এটা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”

তবে ভোজ্য তেল আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, প্রথম ধাপে শুধুমাত্র খোলা সয়াবিন তেল প্যাকেটজাত করার লক্ষ্য স্থির করা উচিত। পাম তেল বন্ধ করতে গেলে বাজার বিপর্যয়ের আশংকা তাদের।

টিকে গ্রুপের পরিচালক মো. সফিউল আতহার তাছলিম বলেন, “এখানে কস্ট একটা বড় সাবজেক্ট। ম্যানুফেচারিং, কার্টুন, বোতল, লেবেল স্টিকারসহ এখানে খরচ ১৬-১৭ টাকা চলে আসবে। এরপর ডিলারের কমিশন আছে ১০ টাকা। তার মানে পার লিটারে ২৬-২৭ টাকার ইম্পাক্ট চলে আসবে।”

দেশে বছরে ভোজ্য তেলের চাহিদা ২৪ লাখ টন। কোম্পানিগুলো যেসব তেল বাজারজাত করে তার মধ্যে ৬৫ শতাংশ তেল খোলা বাজারে এবং ৩৫ শতাংশ তেল প্যাকেটজাত অবস্থায় বিক্রি করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনোরা ফাতেহীর অনুষ্ঠানে ভ্যাট ফাঁকি
পরবর্তী নিবন্ধসীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে যুবক আহত