ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগের দিন জেলায় শুরু হয়েছে ৩৮ ঘণ্টার বাস ও মিনিবাস ধর্মঘট। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘটের কারণে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সব গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধের দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ফরিদপুর জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
ধর্মঘটের কারণে বাস ও মিনিবাসের পাশাপাশি সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন সড়কে তিন চাকার মাহিন্দ্রা এবং মাইক্রোবাস চলাচলও সীমিত হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা গেছে।
আলফাডাঙ্গা উপজেলার কাতলাসুর গ্রামের শাহরিয়ার হোসেন ও বারাংকুলা গ্রামের শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, যানবাহন বন্ধ। সাত সকালে ঘর থেকে বের হয়ে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ধর্মঘটে কষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু জরুরি কাজ থাকায় অনেককে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বিকল্প মাধ্যমে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এতে সময়ও লাগছে বেশি।
বোয়ালমারীর মিজানুর রহমান বলেন, স্ত্রীকে ডাক্তার দেখানোর সিরিয়াল ছিল শুরুর। বাস না পেয়ে ভেঙে ভেঙে অটোরিকশায় করে আসতে হয়েছে। ভোগান্তির শেষ নেই। জনপ্রতি ৭০ টাকার ভাড়া দিতে হয়েছে ২৫০ টাকা করে। এতে কয়েকগুণ বেড়েছে যাতায়াত খরচ। ফেরার পথে কীভাবে যাবো সে চিন্তায় আছি।
ধর্মঘটের বিষয়ে জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নাসির বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মহাসড়কে অবৈধ যান চলাচল বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনার বরাবর গত সোমবার চিঠি দিয়ে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিন্তু দাবি মানা হয়নি। ফলে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুর জেলা বাস টার্মিনাল থেকে আঞ্চলিক বাস ও মিনিবাসসহ দূরপাল্লার পরিবহনের সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে আগামীকাল শনিবার (১২ নভেম্বর) ফরিদপুরের কোমরপুর আবদুল আজিজ ইনিস্টিটিউশন মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ৩৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট থাকায় নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিতে আগেভাগেই শহরে প্রবেশ করেছেন। গত দুদিন ধরে সমাবেশস্থলেই চলছে তাদের রান্না-খাওয়া। থাকছেনও সেখানেই।
জেলা বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, বিএনপির গণসমাবেশ বাধা দেওয়ার অংশ হিসেবেই সরকার গণপরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে। তবে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। এরই মধ্যে আশপাশের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা এসে গেছেন।
এর আগে ময়মনসিংহ, রংপুর, খুলনা, বরিশালেও বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে বিএনপি নেতাকর্মীদের আগে থেকে সমাবেশস্থলে অবস্থান নেওয়ার ঘটনা দেখা যায়।