নিউজ ডেস্ক : ধনী দেশগুলোর অবহেলার কারণে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়া (গ্রাজুয়েশন) দেশগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। গত জুন মাসে জেনেভায় অনুষ্ঠিত ১২তম বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা মন্ত্রিসভা সম্মেলনেও স্বল্পোন্নত দেশের উত্থাপিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি।
রোববার (২০ নভেম্বর) ‘ডব্লিউটিও-এমসি-১২ আউটকামস নেক্সট স্টেপস ফর বাংলাদেশ এ্যাজ এ গ্র্যাজুয়েটিং এলডিসি’ শীর্ষক সংলাপে অংশগ্রহণকারী বক্তারা এসব কথা বলেন।
ফ্রেডরিখ-এবার্ট-স্টিফটুং (এফইএস) বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই আলোচনা অধিবেশনের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সিপিডির ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দাবিগুলো ডব্লিউটিও- এমসি১২-এ উপেক্ষিত হয়েছে। সম্মেলনে উন্নত ও ধনী দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
ড. মুস্তাফিজুর বলেন, বাংলাদেশের প্রধান এজেন্ডা এলডিসি গ্রাজুয়েট। এর আগে গ্রাজুয়েশন পাওয়া ছয়টি দেশের বেশিরভাগই ছোট অর্থনীতির। বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যারা সর্বাধিক সুবিধা নিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু এলডিসি উত্তরণের পর অনেক সুবিধাই হারাতে হবে। রপ্তানি খাতে প্রায় ৯০ শতাংশ সুবিধা বাংলাদেশের জন্য থাকবে না।
তাই রপ্তানি কর্মক্ষমতা টেকসই এবং উন্নত করতে হলে পছন্দ-চালিত প্রতিযোগিতা থেকে দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা-চালিত প্রতিযোগিতায় স্থানান্তরিত হওয়ার পরামর্শ দেন ড. মুস্তাফিজুর।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ফোরামে বাংলাদেশের স্বার্থ একচেটিয়াভাবে আলোচনা ও সুরক্ষিত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি পৃথক এবং নিবেদিত সেল গঠন করা উচিত।
সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, যেসব দেশ আগে এলডিসি গ্রাজুয়েশন হয়েছে তারা জনসংখ্যা ও অর্থনীতির আকারের দিক থেকে ছোট দেশ। অর্থনীতি ও জনসংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশের অবস্থান বৃহৎ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেটি এলডিসি হিসাবে পাওয়া সুযোগগুলোকে যথাযথভাবে ব্যবহার করেছে। দেশটি অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা ব্যবহার করে রপ্তানি বাড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো যদি এই ধরনের সুযোগগুলো আরও চলতে থাকবে কিনা। যদি তা না হয়, তাহলে তারা কীভাবে কাজ করবে? এমসি-১২ এর ঘোষণায় গ্রাজুয়েশন হওয়ার পরে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো অতিক্রম করার জন্য কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ধনী দেশগুলোর অবহেলার কারণে, গ্রাজুয়েশন পাওয়া দেশগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। ভবিষ্যৎ নন-এলডিসি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিবেচনা করে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।