নিউজ ডেস্ক : জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব সরকার একটি টাস্কফোর্স গঠনে সম্মত হয়েছে।
টাস্কফোর্সটি জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দুই দেশের সুবিধাজনক সময়ে নিয়মিত সভা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহ ও ইস্টার্ন রিফাইনারি ইউনিট দুই প্রকল্পে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে সৌদি।
বাংলাদেশ-সৌদির মধ্যে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের ১৪তম সভায় এসব বিষয় জানানো হয়। রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস এসব তথ্য জানায়।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান। সৌদির পক্ষে ছিলেন দেশটির মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার ড. আব্দুল্লাহ বিন নাসের বিন মোহাম্মাদ আবুথনাইন।
দূতাবাস জানায়, সভায় জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সৌদি আরব ও বাংলাদেশ একটি টাস্কফোর্স গঠনে সম্মত হয়। জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে দুই দেশের সুবিধাজনক সময়ে নিয়মিত সভা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহ ও ইস্টার্ন রিফাইনারি ইউনিট দুই প্রকল্পে সৌদি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ অনুরোধ জানালে দেশটি সহযোগিতার আশ্বাস দেয়।
এছাড়া সৌদি আকওয়া পাওয়ার বাংলাদেশে ১ হাজার মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার ও ৭৩০ মেগাওয়াটের গ্যাস বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় দুই দেশের নৌ পেশাজীবীদের মধ্যে নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সম্ভাব্য ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশের নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সৌদির যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে সৌদিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এবং সৌদির পক্ষে মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টের ডেপুটি আব্দুল রহমান এম আল থুনায়েন স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
এছাড়া এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ এবং ফেডারেশন অব সৌদি চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল গঠনে সমঝোতা হয়। এ সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষে এফবিসিসিআইয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাবিব উল্লাহ ডন স্বাক্ষর করেন। সৌদি চেম্বারের পক্ষে ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী তারিক আল হায়দারী স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
এর বাইরে আরবের স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ থেকে পেশাজীবী নিয়োগের বিষয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এবং সৌদির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি ‘এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়নের জন্য দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সমঝোতা হয়। এছাড়া দুই দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বিজ্ঞান ও শিক্ষার সব ক্ষেত্রে কার্যকরী দ্বিপাক্ষিক সহায়তা বাড়াতে আরেকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে সম্মত হয় উভয়পক্ষ।
সভায় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইসিটি, কৃষি, পরিবেশ, ধর্মীয় মূল্যবোধ, ইত্যাদি বিষয়ে স্বার্থসংশ্লিষ্ট আলোচনা এবং পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। সভা শেষে একটি যৌথ কার্য বিবরণী স্বাক্ষর করা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন।