নিজস্ব প্রতিবেদক : ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য দুই কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে খরচ হবে ৩৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার টিসিবির মাধ্যমে নির্ধারিত পণ্য বিক্রি করে থাকে।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভা শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিস্তারিত সাংবাদিকদের তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব।
তিনি জানান, আজকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩৬তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির ৬টি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সাঈদ মাহবুব বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ২ কোটি ২০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রতি লিটার তেলের দাম পড়বে ১৫৬ দশমিক ৯৮ টাকা।
আগে এই তেলের দাম ছিল ১৬২ দশমিক ৯৪ টাকা। সে হিসাবে আগের তুলনায় প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৬ টাকা ২ পয়সা কমে কেনা হচ্ছে। তবে কোন দেশ কিংবা কোন কোম্পানির কাছ থেকে কেনা হবে, সেই তথ্য দেওয়া হয়নি।
এরআগে ১০ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ব্রাজিল থেকে ১২ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন চিনি ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে খরচ হবে ৬৫ লাখ ৫২ হাজার ৬২৫ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৫ কোটি ৯৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩৩৭ টাকা ব্যয় হবে।
গত ৩ নভেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে খরচ ধরা হয় ৮৯ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। প্রতি কেজি সয়াবিনের দাম ধরা হয় ১৬২ দশমিক ৯৪ টাকা। যা আগে ছিল ১৭১ দশমিক ৮৫ টাকা।
তার আগে গত ১৯ অক্টোবর ক্রয় কমিটি টিসিবি কর্তৃক এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ঢাকা মেঘনা ভোজ্য তেল শোধনাগার লিমিটেড কাছ থেকে ১৮৯ কোটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়। প্রতি লিটারের দাম পড়ে ১৭১ দশমিক ৮৫ টাকা। যা আগে ছিল ১৮৫ টাকা।
এছাড়া ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সুপার ওয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে ক্রয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মোট খরচ ধরা হয় ৮৭ কোটি ৯৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রতি লিটার ১৫৯ দশমিক ৯৫ টাকা, যার পূর্বমূল্য ছিল ১৮৫ টাকা।
তারও আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় টিসিবির মাধ্যমে দেশীয় তিন কোম্পানি থেকে এক কোটি ৬৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই তেল কিনতে খরচ ধরা হয় ৩০৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এই তেল কিনতে খরচ ধরা হয় ১০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
এছাড়া সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেডের কাছ থেকে ১০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে মেঘনা এডিবল অয়ের রিফাইনারি লিমিটেডের কাছ থেকে ১০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
ফ্যামিলি বা পরিবার কার্ডের আওতায় একজন কার্ডধারীর কাছে সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬৫ টাকা ও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে শুধু সিটি করপোরেশন এলাকা ও টিসিবির আঞ্চলিক কার্যালয়-সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোয়।