বিএনপির নির্বাচন ছিল ১০ হোন্ডা আর ২০ গুন্ডার: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির আমলে কী হতো তার জন্য বেশি দূর যেতে হবে না। ২০০১ সালের নির্বাচন, মাগুরার নির্বাচন, মিরপুর-১০ নির্বাচনগুলো স্মরণ করলে হবে। কথা ছিল (প্রচলিত) ১০ হোন্ডা, ২০ গুন্ডার নির্বাচন।

তিনি আরও বলেন, ভোটের সিল মারা থেকে শুরু করে নানান অপকর্ম হতো। যার জন্য আমরা স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছি। ২০০৬ সালে নির্বাচন করার জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট করেছিল বিএনপি।

আজ শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশে এত উন্নতি হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকে। নির্বাচনে যতটুকু স্বচ্ছতা তা আওয়ামী লীগের আন্দোলনের ফসল।

বৈদেশি মুদ্রার রিজার্ভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নেই রিজার্ভের টাকা খরচ হয়েছে। এখনও ৫ মাসের ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ আছে। যারা বলেন রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল? কেন খরচ হচ্ছে? তাদের বলছি- রিজার্ভের টাকা গেছে গম, ভুট্টা, ভোজ্যতেলসহ মানুষের খাদ্য কেনায়, সার কেনায়, মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশে ২০০৮ নির্বাচনের পর, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর, এক টানা ২০২২ পর্যন্ত এদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। না থাকলে এতো উন্নতি হতো না। আমরা খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাফল্য আনতে পেরেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, আমি একটা কথা বলতে চাই, রিজার্ভ নিয়ে তো খুব আলোচনা, আমরা কী করেছি। আমাদের জ্বালানি তেল কিনতে হয়েছে। এলএনজি যেটা ৬ ডলারে কিনতে পারতাম, সেটা এখন ৬২ ডলার, জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেলসহ প্রত্যেকটার দাম বেড়েছে। করোনার টিকা কিনতে হয়েছে। আপনার দেখেছেন শত শত সেতু হয়েছে। একদিনে ১০০ সেতু উদ্বোধন। আজ পর্যন্ত কেউ করতে পেরেছে? বিএনপি তো ক্ষমতায় ছিল, তারা দাবি করে এতো বছর, তারা কী করতে পেরেছে? পারেনি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার করতে পেরেছে। পদ্মা সেতুর মতো সেতু আমাদের নিজেদের অর্থায়নে করেছি। রেল, বিমান, নদী ড্রেজিং, খাদ্য ক্রয় করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলব, বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগে একটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, মাটি অত্যন্ত নরম, এখানে রাস্তাঘাট করতে গেলে অনেক বেশি খরচ হয়। ওই মাটিকে শক্ত করে তারপর করতে হয়। অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করে আমরা করতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, অনেকে প্রশ্ন করে টাকা বেশি লাগে, যাদের এ দেশের সাথে সম্পর্ক নেই, যারা এ দেশের মাটি চেনে না, এ দেশের নদী, খাল-বিল বোঝে না, তারাই এই প্রশ্ন করবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি যখন ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ করব ঘোষণা দিয়েছিলাম, তখন শুরু হয় হাসাহাসি। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই তো সোশ্যাল মিডিয়াতে ইচ্ছে মতো বলতে পারছেন। আগে একটা টেলিভিশন এবং একটা রেডিও ছিল সরকারি। আওয়ামী লীগের আমলে প্রচুর টেলিভিশন আর রেডিও করে দিয়েছি। আমি করে দিয়েছি বলেই তো আজ কথা বলতে পারছে। না হলে তো কথা বলতে পারত না। সারা দিন কথা বলে বাক স্বাধীনতা নেই। এই যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এতো কথা বলে, যদি আমি ডিজিটাল বাংলাদেশ না করতাম তাহলে কথা বলতো কোথায়?

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের আগে তো এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। এখন তো কেউ বাংলাদেশকে ছোট চোখে দেখে না। দেখতে পারে না। আমরা বিজয়ী জাতি, সারা বিশ্বে মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলেছেন- পদ্মা সেতু করে কী লাভ হবে? এখন যে ইলিশ মাছ দুই ঘণ্টায় তাজা তাজা ঢাকায় পৌঁছাচ্ছে, আর মজা করে খাচ্ছে। নানা কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ ওই অঞ্চল পুরোটাই অবহেলিত ছিল। এটা কি সুফল নয়?

এ সময় উপদেষ্টাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেক কথা বলে ফেললাম। নানা সমালোচনা শুনতে হয় তো। এত কষ্ট করে দিনরাত এত পরিশ্রম করে বাংলাদেশকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছি। বাইরের লোকেরা দেখে, আমাদের দেশের লোকেরা দেখে না। তারপরও অনেক সমালোচনা শুনতে হয়, কষ্ট লাগে।

এ বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দাহিলানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসলামী ব্যাংকের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পন্ন
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশ ও জিসিসি’র মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে সমঝোতা স্মারক সই