নিজস্ব প্রতিবেদক : সংকট মোকাবিলায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে দিন দিন কমছে রিজার্ভের পরিমাণ।
বুধবার (৩০ নভেম্বর) দেশের রিজার্ভ ৩ হাজার ৩৮৬ কোটি (৩৩ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন) ডলারে নেমে এসেছে।কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে হিসাব করা হলে রিজার্ভ আরও ৮ বিলিয়নের মতো কম হবে। সে হিসেবে এখন প্রকৃত রিজার্ভ আছে ২৫ বিলিয়ন ডলারের মতো।
ডলারের খরচ কমাতে আমদানি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে নতুন এলসি খোলা কমেছে। তবে বাকি বা দেরিতে পরিশোধের শর্তে আগের খোলা এলসির দায় এখন পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমেনি। যে কারণে দিন দিন ডলারের সংকট বাড়ছে। চাপে পড়ছে অর্থনীতি।
এদিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো ৯৭ টাকা দামে প্রতি ডলার বিক্রি করছে। যদিও পণ্য আমদানিতে ব্যাংকগুলো প্রতি ডলারের দাম নিচ্ছে ১০২ টাকা। প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম দিচ্ছে ১০৪ টাকা। আর রপ্তানি নগদায়নের ক্ষেত্রে প্রতি ডলারের দাম ধরা হচ্ছে ১০২ টাকা ৪৮ পয়সা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য অনেক বেড়ে যায়। ফলে বিগত কয়েক মাস ধরে আমদানি ব্যয়ে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ ঠিক রাখতে গিয়ে প্রচুর ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর সরকারের আমদানি দায় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিক্রির পরিমাণ ৬০৫ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে রেকর্ড ৭৬২ কোটি ১৭ লাখ ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তার আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেখানে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কিনেছিল প্রায় ৭৯৩ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে রিজার্ভ কমে এ পর্যায়ে নেমেছে। এর আগে ধারাবাহিকভাবে যা বাড়ছিল। ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগেতা বেড়ে হয়েছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে আরো বেড়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছায়। ওই বছরের ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে দেশের রিজার্ভ। এরপর তা বেড়ে গত বছরের আগস্টে প্রথমবারের মতো ৪৮ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার হয়। তারপর গত কয়েক মাসে ধরে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।
এমএ