নিজস্ব প্রতিবেদক : জ্বালানি সংকট, পরিবহন ভাড়া ও ডলারের দাম বৃদ্ধির মধ্যেই হুট করে গত নভেম্বর থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল লাইমস্টোনের ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও তিন শতাংশ অগ্রিম আয়করের সঙ্গে অতিরিক্ত দুই শতাংশ অগ্রিম আয়করারোপ করা হয়েছে। আকস্মিক এ শুল্ক-করারোপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিমেন্ট খাত। যা দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাধার সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করেন সিমেন্ট শিল্প মালিকেরা।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) গুলশানের হোটেল আমারিতে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ তথ্য তুলে ধরেন বিসিএমএর সভাপতি মো. আলমগীর কবির। এ সময়ে দেশের বিভিন্ন সিমেন্ট ফ্যাক্টরি মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আলমগীর কবির বলেন, সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য প্রধান কাঁচামালগুলো আমদানি করা হয়। সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল লাইমস্টোনের ওপর আকস্মিক ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক ও তিন শতাংশ অগ্রিম আয়করের সঙ্গে আরও ২ শতাংশ অতিরিক্ত অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি লাইমস্টোন আমদানিতে আগে থেকেই ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ও ৩ শতাংশ অগ্রিম কর বিদ্যমান রয়েছে। লাইমস্টোনের ওপর আকস্মিক সম্পূরক শুল্ক ধার্যের কারণে এ খাত ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অতিরিক্ত শুল্কায়নের ফলে বর্তমানে আমদানি মূল্যের ওপর ২৭ শতাংশ এর পরিবর্তে প্রায় ৬৭ শতাংশ শুল্ক ও কর পরিশোধ করে লাইমস্টোন ছাড় করাতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন— সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য প্রধান কাঁচামাল হলো ক্লিংকার, স্লাগ, লাইমস্টোন, ফ্লাই অ্যাশ এবং জিপসাম। এ পাঁচ ধরনের কাঁচামালই আমদানি করতে হয়।
তিনি বলেন, আমদানি পর্যায় ছাড়াও বিক্রয় পর্যায়েও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ধার্য করা আছে। অর্থাৎ একটি সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোকসান করলেও চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে এ অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করতে হবে যা কোনো বিবেচনায়ই গ্রহণযোগ্য নয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে সিমেন্ট শিল্পের জন্য অগ্রিম আয়কর এর কারণে দূরাবস্থার বিষয়টি বহুবার তুলে ধরেছি। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে না, যার ফলে দেশের একটি উদীয়মান শিল্প খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে মো. আলমগীর কবির আবারও লাইমস্টোনের ওপর সম্পূরক শুল্ক জরুরিভিত্তিতে সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।