নিজস্ব প্রতিবেদক : নিত্যনতুন সেবার উদ্ভাবনে এনআরবিসি ব্যাংক এশিয়ার সেরা ব্যাংকের স্বীকৃতি পেয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও সেরা ডিলার হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে ব্যাংকটি। অনলাইনে এসিএস চালানের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রথম হওয়ার বিশেষ স্বীকৃতিও মিলেছে। এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে বিগত ৫ বছরে।
ব্যাংকিং খাতে নিত্যনতুন সেবা প্রচলনের অন্যতম দিশারী এনআরবিসি ব্যাংক। সর্বোত্তম তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে এনআরবিসি ব্যাংক গ্রাম-বাংলার প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের ভাগ্যোন্নয়নে অর্থায়ন করে যাচ্ছে। এজন্য এনআরবিসি ব্যাংকই প্রথম সব সুবিধা নিয়ে স্বল্প পরিসরে উপশাখা ব্যাংকিং চালু করেছে। এছাড়াও ব্যাংকিং সেবাবঞ্চিত মানুষদের কর্মসংস্থানে সহজশর্তে বিতরণ করছে ক্ষুদ্রঋণ। চেকবই ও এটিএম কার্ড ছাড়াই লেনদেন করতে দেশের ইতিহাস সর্বপ্রথম ‘কিউআর কোড’ চালু করেছে ব্যাংকটি। লেনদেনের এ সহজ পদ্ধতি ছাড়াও প্ল্যানেট অ্যাপের মাধ্যমে মিলছে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা।
এনআরবিসি ব্যাংক ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল প্রথম যাত্রা শুরু করে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে এসএম পারভেজ তমালের নেতৃত্বে নতুন পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর। এরপর থেকে সব সূচকেই দ্রুত এগোচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল বলেন, আমরা একটা প্রেক্ষাপটে এ ব্যাংকের দায়িত্ব গ্রহণ করি। ব্যাংটিকে টেনে তোলা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু আমরা প্রবাসীরা আমাদের বিদেশের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংকটিকে পরিচালনা করছি। আমরা চেয়েছি আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে একেবারে নিম্ন পর্যায়ের প্রান্তিক মানুষেরাও সেবা পাক। ঘরে বসেই তাদের কর্মসংস্থান হোক, নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হোক। এ লক্ষ্যে এনআরবিসি ব্যাংক উপশাখা ও বিশেষ ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্প চালু করেছে। সরকারি সেবা সহজীকরণে বুথ স্থাপন ও নতুন প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। এ সেবা নিয়ে আমরা অনেকটাই সফল হয়েছি। এজন্য এশিয়ার সেরা ব্যাংক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছি। আমরা মানুষের কল্যাণে আরও বহুদূর যেতে চাই।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে সারাদেশে ব্যাংকটির ৬৫০টি উপশাখাসহ ৯৪টি শাখা রয়েছে। আগামী সপ্তাহে ১০০তম শাখা উদ্বোধন করতে যাচ্ছে ব্যাংকটি। এছাড়াও রয়েছে বিআরটিএ অফিসগুলোতে বুথ এবং ভূমি রেজিস্ট্রেশন অফিস। এজেন্ট পয়েন্ট রয়েছে প্রায় ৫৫০টি। এসব জায়গায় ৬ হাজার ব্যাংকার কাজ করছেন। প্রান্তিক মানুষের জন্য স্বল্প সুদে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করছে। এছাড়া ৪৮ হাজার গ্রাহককে সর্বমোট ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হয়েছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষিত যুবকদের উদ্যোক্তাদের গড়ে তুলতে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
এসএম পারভেজ তমাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবকদের এনআরবিসি ব্যাংকে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। সব মানুষদের সেবার আওতায় আনতে ইসলামিক ব্যাংকিং আল আমিন চালু করা হয়েছে। গ্রাহকদের সহজে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে চালু করেছে প্ল্যানেট অ্যাপ। এ অ্যাপের মাধ্যমে নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা, ঋণ আবেদন, টাকা স্থানান্তর, বিভিন্ন বিল পরিশোধ এবং চেক ও কার্ড ছাড়াই টাকা উত্তোলন করা যাচ্ছে। নতুন নতুন সেবার উদ্ভাবন ও প্রসারে এনআরবিসি ব্যাংক ৬টি ক্যাটাগরিতে এশিয়ার সেরা ব্যাংক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে একাধিকবার।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যান্ড সিইও গোলাম আউলিয়া বলেন, করোনাভাইরাস, যুদ্ধবিগ্রহ ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি অর্থনীতির অনুকূলে নেই। এরমধ্যে তুলনামূলকভাবে এনআরবিসি ব্যাংক ভালো করছে। এর অন্যতম কারণ আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করছি, কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে এবং মানুষের কাছে গিয়ে সেবা দিচ্ছি। এতে মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। এজন্য আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ, মুনাফাসহ সব সূচকে এনআরবিসি ব্যাংক দ্রুত এগোচ্ছে।
এদিকে সাফল্যের ৫ বছর উদযাপন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম আউলিয়া। শুরুতেই ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমালকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পর্যায়ক্রমে ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু, পরিচালক আদনান ইমাম, একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, মোহাম্মদ নাজিম, এএম সাইদুর রহমান, লকিয়ত উল্ল্যাহ, উদ্যোক্তা ও সাবেক পরিচালক আবু বকর চৌধুরী ও মঞ্জুরুল ইসলাম, স্বতন্ত্র (অব.) পরিচালক এয়ার চিফ মার্শাল আবু এশরার, ড. খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান ও ড. রাদ মুজিব লালনকে ক্রেস্ট দেওয়াসহ শুভেচ্ছা জানানো হয়।