আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি। অস্থিরতা বিরাজ করছে তেলের আন্তর্জাতিক বাজারেও। সস্তায় তেল বিক্রি করছে রাশিয়া। সেকারণে বেধে দেওয়া দরে এবার তেল কিনবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো। ইইউ দেশগুলোর সরকার রাশিয়ার সমুদ্রজাত জ্বালানি তেল কেনার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর)। ব্যারেলপ্রতি এই তেলের দাম ৬০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হলো।
আগামী ৫ ডিসেম্বর থেকে সমুদ্রপথে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল সরবরাহে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। এর আগেই পশ্চিমা দেশগুলো রুশ তেলের দাম নির্ধারণের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছালো।
রাশিয়ার সমুদ্রজাত অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কম দামে কেনার মূল প্রস্তাব ছিল বিশ্বের শীর্ষ ৭টি অর্থনীতির দেশের জোট জি-৭-এর। তাদের প্রস্তাব ছিল, বৈশ্বিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারমূল্য ৫ শতাংশ কমিয়ে ব্যারেলপ্রতি ৬৫ থেকে ৭০ ডলারে তেল কিনতে সম্মত হোক ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
তবে এই সম্মতি লিখিতভাবে সব ইইউ সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন পেতে পারে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর)। ইউক্রেনের পাশাপাশি পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া ও লিথুয়ানিয়ার সরকার বলে আসছিল, রুশ তেলের দর ৬০ ডলারের অনেক কম নির্ধারণ করা দরকার। তবে গ্রিস, সাইপ্রাস ও মাল্টা মনে করে, রুশ তেলের দাম একটু বেশি নির্ধারণ করা হোক।
ইইউ-এর এক কূটনীতিক বলেছেন, পোল্যান্ড, যারা দাম যতটা সম্ভব কম কমানোর জন্য চাপ দিয়েছিল, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি, আদৌ তারা চুক্তিটিকে সমর্থন করবে কিনা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো রাশিয়ার তেলের মূল্যসীমা নির্ধারণ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরেই তর্ক-বিতর্ক করছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে রাশিয়ার তেল বিক্রি থেকে আয় হ্রাস করা। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা ৫ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী তেলের দামের বৃদ্ধি রোধ করাও এর লক্ষ্য।
এই চুক্তি, পশ্চিমা বীমা ও সামুদ্রিক পরিষেবা ব্যবহার করে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল আমদানি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে, নির্ধারিত দামের চেয়ে ব্যারেলপ্রতি বেশি অর্থ প্রদান না করলে।
জি-৭ এর এক শীর্ষ কর্মকর্তা এর আগে বলেন, শিগগির একটি চুক্তি হচ্ছে এবং আস্থা প্রকাশ করে বলেন, তেলের এই নির্ধারিত দাম ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধের সক্ষমতাকে সীমিত করবে।
এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে চীন, ভারতসহ যেসব দেশ রাশিয়া থেকে তেল কিনছে, তারা বিপাকে পড়বে। কেননা, তেল পরিবহনের ক্ষেত্রে জাহাজের অধিকাংশ বিমাকারী ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক।
সূত্র: রয়টার্স