নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এর পরের চারমাস আর সেই লক্ষ্য ছোঁয়া যায়নি। তবে নতুন বছরের শুরুতে ইতিবাচক ধারায় রয়েছে প্রবাসী আয়।
নতুন বছরের প্রথম মাসের প্রথম ৬ দিনে ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) এর পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন এসেছে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৭২৮ কোটি টাকা করে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো মাসে ২১০ কোটি ডলার বা ২২ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে রেমিট্যান্স।কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি জানুয়ারি মাসের ৬ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে মোট ৪০৮.৩৮ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। বেসরকারি এ ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৫.২৬ মিলিয়ন বা ৯ কোটি ৫২ লাখ ডলার। এর পরেই রয়েছে আল-আরাফাহ ব্যাংক ২৯.৩২, অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ২৫.৭৯ মিলিয়ন ডলার। তবে এখন পর্যন্ত কোনো রেমিট্যান্স আসেনি বিডিবিএল, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বিদেশি সিটি ব্যাংক (এনএ), হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে।
চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা চার মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের আশপাশে রয়ে যায় রেমিট্যান্স। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই-এ এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে এসেছিল ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। এর পরের মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, অক্টোবরে এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আর আর সদ্য বিদায়ী ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যে হিসাব, তাতে অনেক লোক দেশের বাইরে গেছেন। তারা যখন বৈধ চ্যানেলে (ব্যাংকিং মাধ্যম) টাকা পাঠানো শুরু করবেন, তখন রেমিট্যান্স আরও বাড়বে।
এর আগে গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।
এদিকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) আরও কমেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধের পর ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। রোববার (৮ জানুয়ারি) দিন শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি মার্কিন ডলার।