ভোটাধিকারে বাধা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: আইনমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আমরা জনগণকে দেশের উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছিলাম। তা পূরণ করার চেষ্টা করছি।

কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার যদি কেউ বাধা দিতে চায়, তাহলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, যেহেতু এটি গণতান্ত্রিক দেশ। নির্বাচনী গণতান্ত্রিক দেশের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কাজেই সঠিক সময়ে সঠিকভাবে নির্বাচন হবে। তবে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো শেষ করাই নতুন বছরের চ‌্যালেঞ্জ।

রোববার (০১ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপে নিয়ে আসতে, গণতন্ত্রের শিকড় বাংলাদেশে শক্ত করতে যথেষ্ট চেষ্টা করছে। বর্তমানে গণতন্ত্রের যে বিকাশ, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই হয়েছে। যে কারণে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, এ সরকারের মেয়াদ পাঁচবছর। এরপর সংবিধানে যেভাবে বলা আছে, সেভাবে নির্বাচন হবে।

টানা তিন মেয়াদে থাকা একটি সরকারের জন্য নতুন বছর কতটা চ্যালেঞ্জের জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করা। যেসব অঙ্গীকার এখনও শেষ হয়নি, সেগুলো শেষ করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেখ হাসিনা বলেছিলেন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু করবে। ২০২২ সালের ২৫ জুন সেই পদ্মাসেতু উদ্বোধন করা হয়েছে। একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল চালু করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এ বছরে বঙ্গবন্ধু টানেল, ঢাকা-ময়মনসিংহ- ঢাক-সিলেটের ফোর লেনের সড়কের কাজ শেষ হবে। যেসব উন্নয়ন কাজ এ বছর শেষ হওয়ার কথা, তা শেষ হবে। আমরা এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে প্রকল্পগুলো শেষ করবো।

কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কীভাবে চ্যালেঞ্জ হয় এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কারণ আমরা করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। এখনো চীনে যথেষ্ট করোনারোগী আছে বলে আপনারা শুনছেন। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তো রয়েছে। এগুলোর প্রভাব কাটিয়ে ওঠে আমরা যেসব প্রকল্পের কথা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবয়ন করা চ্যালেঞ্জ। যে কারণে আমি চ্যালেঞ্জের কথা বলেছি।

২০১৪ ও ২০১৮ সালে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যদি কোনো দল নির্বাচনে না আসে, সেটা তো আমাদের দায়িত্ব না। আমরা আশা করবো, পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর সংবিধানে যে সময়ে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে—সেটা ২০২৩ সালের শেষে হোক, কিংবা ২০২৪ সালের প্রথমে—যখন নির্বাচন হবে, আমরা আশা করবো সবাই তাতে অংশগ্রহণ করবে।

গত নির্বাচনের আগে দেখেছি যে মাঠে সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা ছিল না। আগুন সন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা অপকর্ম আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এ বিষয়ে আপনাদের প্রস্তুতি কেমন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আমাদের (সরকার) দায়বদ্ধতা জনগণের কাছে। আমরা জনগণকে দেশের উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছিলাম। তা পূরণ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু জনগণের ভোটাধিকার যদি কেউ বাধা দিতে চায়, তাহলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামায়াতে ইসলাম গত কয়েকদিন ধরে সহিংসতা করছে, সংঘর্ষও হয়েছে, এ বিষয়ে সরকারের ব্যবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেবে। এটা পরিষ্কার কথা। কারণ এখন জনগণ উন্নয়ন চায়। আমরা সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই। কাজেই এর মধ্যে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠন মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, এ বিষয়ে আপনারা কী ভাবছেন, জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, দেখেন বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চেয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের সময়। আমি বলব, যেসব ক্ষেত্রে জনগণ বিচার পাইনি, সেসব ক্ষেত্রে বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছে, তারা কিন্তু অতীতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে কোনো কথা বলেননি। কাজেই তাদের বক্তব্য কতটা বিশ্বাসযাগ্য, তা আপনারা নির্ধারণ করবেন।

জামায়াত নিষিদ্ধে কোনো নির্বাহী আদেশ দেওয়া যায় কিনা, প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, সেটা আপনারা দেখবেন, ধন্যবাদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমে: শিক্ষামন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধদুর্নীতি নয়, মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি: প্রধানমন্ত্রী