নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে ডলার সংকট নিরসনে রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে ডলারের দাম আরও এক টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যাংকগুলো। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে রপ্তানি আয়ে ডলারের দাম বাড়িয়ে এখন ১০২ টাকা করা হয়েছে।
রোববার (১ জানুয়ারি) ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) শীর্ষ নেতানের সভায় নতুন এ দর নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে রপ্তানি আয় বাড়ানো হলেও প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম আগের মতো ১০৭ টাকা থাকছে।
এবিবি ও বাফেদার নেতারা বিভিন্ন লেনদেনে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ শুরু করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব ব্যাংকগুলোর ওপর ছেড়ে দেওয়ার শুরুতে রপ্তানি আয়ে ডলারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ৯৯ টাকা ও প্রবাসী আয়ে ১০৮ টাকা। আর ডলারের পাঁচদিনের গড় খরচের চেয়ে ১ টাকা বেশি দামে আমদানি দায় শোধ করতে বলা হয়। পরে বিভিন্ন সময় দফায় দফায় বৈঠক করে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়।
এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত এক ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে, সেটাকে কাছাকাছি নিয়ে আসা হবে। এ কারণে নতুন করে আরও এক টাকা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে রপ্তানি আয় ব্যাংকগুলো সংগ্রহ করবে ১০২ টাকা করে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) আন্তঃব্যাংক ডলার লেনদেন হয়েছে সর্বনিম্ন ১০২ টাকা ৭২ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা পর্যন্ত। চলতি বছরের এপ্রিল থেকেই ডলারের দাম বেশি বেড়েছে। গত এপ্রিলের শুরুতে প্রতি ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। সে হিসাবে গত নয় মাসে ডলারের দাম বেড়েছে ২১ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ হিসাব বলছে, ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৮৩ কোটি ৮৯ লাখ ডলার বা ৩৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার। এক বছর আগের একই দিনে (২০২১ সালের ডিসেম্বর) ছিল ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ২২ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে দেশের রিজার্ভ কমেছে এক হাজার ১৯৬ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। আর এক মাসের ব্যবধানে কমেছে প্রায় দুই বিলিয়ন (১.৯৬) ডলার।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর মানদণ্ড অনুযায়ী রিজার্ভ গণনা করলে বর্তমান রিজার্ভ থেকে আরও ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে, এতে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দাঁড়াবে ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে।
আইএমএফের মানদণ্ড অনুসারে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে মজুতকৃত রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণ এবং রিজার্ভ থেকে দেশীয় প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যয় বাদ যাবে। যদিও সরকার এখন আইএমএফ এবং নিজস্ব অর্থাৎ দুই ধরনের হিসাবই রাখছে।