গ্রাহকরা জীবন বিমার ৩০ শতাংশ দাবি পাচ্ছেন না

নিউজ ডেস্ক : জীবন বিমার গ্রাহকরা প্রায় ৩০ শতাংশ দাবি পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী এসব কথা বলেন। এ সময় আইডিআরএ’র অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আগামী ১ মার্চ ‘জাতীয় বিমা দিবস -২০২৩’ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে আইডিআরএ।

বিমা খাতের নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিমার মূল সমস্যা সচেতনতার অভাব, লিটারেসির অভাব। আমরা মানুষের সামনে বীমার গুরুত্ব তুলে ধরতে পারিনি। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রডাক্ট নির্বাচন, পলিসি গ্রহণ করতে পারিনি। এছাড়া বিমা দাবি পরিশোধে ব্যর্থতা তো আমাদের আছেই। জীবন বিমায় প্রায় ৩০ শতাংশ দাবি পরিশোধ করছে না। এসব কারণে মানুষের মধ্যে বিমা নিয়ে হতাশা থেকে অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তাতে মানুষ বীমা না করে অন্য কীভাবে ক্ষতিপূরণ পেতে পারে তা নিয়ে চিন্তা করছে। আমরা এসব সমস্যা চিহ্নিত করেছি। যা পর্যায়ক্রমে সমাধান করে বিমার উন্নয়ন করা হবে।

আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বলেন, বিমাখাতে প্রিমিয়াম, বিমা দাবি নিষ্পত্তির হার আগের চেয়ে গত দুই বছরে বেড়েছে। এ সময় সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মানুষের আর্থিক ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে বিমার প্রিমিয়াম দেশের উন্নয়নে বিনিয়োগের সুযোগ আছে।

জয়নুল বারী বলেন, বঙ্গবন্ধু বিমার জন্য কাজ করে গেছেন। এটাকে অনুপ্রেরণায় নিয়ে আমরা বিমা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের অর্থনীতির অগ্রগতির তুলনায় বিমা অনেকটা পিছিয়ে আছে। আর পিছিয়ে পড়ার কারণ ও নানা সমস্যা আমরা চিহ্নিত করেছি। এসব সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে বিমা খাত আগামী দিনে দেশের অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাবে।

লিখিত বক্তব্যে জয়নুল বারী জানান, ২০২২ সাল শেষে বিমা খাতের গ্রোস প্রিমিয়ামের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। এরমধ্যে লাইফ বীমার গ্রোস প্রিমিয়ামের পরিমাণ ১১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা এবং আর নন লাইফের ৫ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। এই সংকটকালে দেশের ব্যাংকিং খাতে বড় তারল্যের যোগান দিয়েছে বিমা খাত। এছাড়া আলোচ্য সময়ে লাইফ ও নন-লাইফ বিমা কোম্পানিগুলোর অর্জিত প্রিমিয়ামের ওপর ১ হাজার ৩০৫ কোটি টাকা ভ্যাট ও ট্যাক্স সরকারের কোষাগারে জমা হয়েছে।

তিনি জানান, বিমা শিল্পের উন্নয়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে আইডিআরএ সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। বীমা খাতের উন্নয়নের জন্য ১১৮.৫০ কোটি টাকার সরকারি অর্থায়ন এবং বিশ্বব্যাংকের ৫১৩.৫০ কোটি টাকাসহ মোট ৬৩২ কোটি টাকার অর্থায়নে বাংলাদেশ বিমাখাত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স একাডেমি, সাধারণ বিমা কর্পোরেশন এবং জীবন বিমা কর্পোরেশনকে পেশাদারিত্ব এবং প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও বাড়ানো হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশেয়ারবাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে
পরবর্তী নিবন্ধঢাকায় আর্জেন্টিনার দূতাবাস উদ্বোধন