নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) মাধ্যমে চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) লেনদেন হয়েছে ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৫২২ কোটি টাকা। আর একক মাসের হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে এ মাসটিতে মোট ৯৬ হাজার ১৩২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর আগে গত বছরের এপ্রিল মাসে এক লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল, যেটা ছিল সর্বোচ্চ লেনদেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম মাস অর্থাৎ জুলাইয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছিল ৮৯ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। আগস্ট মাসে কিছুটা কমেছিল লেনদেন। ওই মাসে লেনদেন হয়েছিল ৮৭ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। পরের মাস সেপ্টেম্বরে লেনদেন হয়েছিল ৮৭ হাজার ৬৩৫ কোটি, অক্টোবরে ৯৩ হাজার ১৩ কোটি, নভেম্বরে ৯২ হাজার ১২৫ কোটি ও বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে লেনদেন হয়েছে ৯৬ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।
অতিদ্রুত শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং দেশের ব্যাংকিং সেবায় নতুন সম্ভাবনা এনে দিয়েছে।
দেশের অর্থনীতিতে বিরাট এক গতি সঞ্চার করছে মোবাইল ব্যাংকিং। এতে নতুন কর্মসংস্থানও বাড়ছে। এমএফএস মাধ্যমে প্রতিদিনের লেনদেন ছাড়াও বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে। এছাড়া অনলাইনে কেনা কাটা, বেতন-ভাতা প্রদানসহ প্রবাসী আয় পাঠানো বাড়ছে দিন দিন। মূলত খরচ কম আর দ্রুত সেবা প্রাপ্তির কারণেই প্রত্যন্ত অঞ্চলে হিসাব খুলছেন বিপুলসংখ্যক গ্রাহক। প্রতি মাসে বাড়ছে এমএফএস গ্রাহক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ডিসেম্বর শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত হিসাবধারী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৩টি। গত বছরের জুলাই মাস শেষে হিসাবের সংখ্যা ছিল ১৮ কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৬৩টি। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ছয় মাসে হিসাব বেড়েছে ৯৯ লাখ ২৫ হাজার ৮১০টি। এসব গ্রাহকের মধ্যে পুরুষ গ্রাহকের সংখ্যা ১১ কোটি ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৪৭০ জন ও নারী গ্রাহক ৮ কোটি ১২ লাখ ৪ হাজার ৪৯৩ জন। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৫৫ লাখ ৪ হাজার ৬৩৭ জন।
চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এমএফএসে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে এক লাখ ৫৩ হাজার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয়েছে ১৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা, বিভিন্ন পরিষেবায় ১২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ও কেনাকাটায় ১৯ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
গত ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা রকেটের মাধ্যমে প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের যাত্রা শুরু। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক জনপ্রিয় এ মাধ্যমে অনুমোদন দিয়েছিল ২০১০ সালে। এখন ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ, নগদ, উপায়সহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে আর্থিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে।