চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ দিনে রেমিট্যান্স ৬৭৭০ কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক : চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ দিনে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৬৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা ৬০ হাজার ডলার, যা টাকার অংকে ৬ হাজার ৭৭০ কোটি ৭৪ লাখ ২০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে)। এ প্রবাসী আয় গত মাসের চেয়ে কিছুটা কম, আর আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগ এ তথ্য প্রকাশ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৮ কোটি ডলার ৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। রাষ্ট্র মালিকানাধীন বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১ কোটি ১৪ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরের জুলাই ও আগস্ট দুই মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল যথাক্রমে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার ও ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। এরপরই ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় আসা কমতে থাকে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর দুই মাসে প্রবাসী আয় আসে যথাক্রমে ১৫২ কোটি ৯৬ লাখ ডলার ও ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। এরপর থেকেই প্রবাসী আয় আসা বাড়তে থাকে। সর্বশেষ গত জানুয়ারি মাসে এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার।

আগের অর্থ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছিল ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার।

তথ্যে দেখা যায়, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৪ কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার ডলার ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৮ লাখ ২০ হাজার ডলার।

হুন্ডি ও অবৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা দুই শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে আড়াই শতাংশ করা, প্রবাসী আয় পাঠাতে ফি প্রত্যাহার, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠানোর মতো উদ্যোগ নেওয়ার পর ডিসেম্বর মাস থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠানো বৃদ্ধি পায়। তারই ধারাবাহিকতায় ফেব্রুয়ারি মাসেও ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় পাঠানোর ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, হুন্ডির মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠানো ঠেকাতে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার (বিএফআইইউ) বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় বেড়ে প্রায় ১৯৬ কোটি ডলার আসে। আগামী মাসগুলোতে আরও বাড়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিএফআইইউ এখন পর্যন্ত সন্দেহভাজন ৫ হাজার ৭৬৬ জন এজেন্ট চিহ্নিত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে পাঠায়। এর মধ্যে হুন্ডির সঙ্গে জড়িত ২ হাজার ২৬৬ জন এজেন্ট এবং তিনজন ডিস্ট্রিবিউটরের এজেন্টশিপ বাতিল করা হয়। বিএফআইইউ যে ৫ হাজার ৫৫৭ সুবিধাভোগীর এমএফএস হিসাব অবরুদ্ধ করেছিল, সেখানে জমার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৩২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এদের মধ্যে ২ হাজার ৯৫৩টি হিসাব সচল করা হয়েছে। বাকি ২ হাজার ৬১৪টি হিসাবে শুধু উত্তোলন বন্ধ আছে। এর মধ্যে ৮০০ জনের বেশি হিসাবধারী তাদের হিসাব সচল করার লিখিত আবেদন করেছেন। বিএফআইইউর কাছে যা বর্তমানে বিবেচনাধীন রয়েছে। পাশাপাশি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাচার হচ্ছে কিনা সে তথ্য খতিয়ে দেখছে আর্থিক গোয়ন্দো সংস্থা বিএফআইইউ।

বাংলাদেশ ব্যাংক, আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ-এর গৃহীত পদক্ষেপ অব্যাহত থাকলে আগামীতে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে। চলতি অর্থ বছরের মাঝামাঝি থেকে বিদেশমুখী শ্রমিকের সংখ্যাও বাড়ছে। আগামী মাসগুলোতে মালয়েশিয়াসহ অন্যান্য দেশে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে এটাও প্রভাব ফেলবে, বলছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেডিকেলে ভর্তি আবেদন শুরু
পরবর্তী নিবন্ধগ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৬ উপশাখার উদ্বোধন